“কুড়মি ও আদিবাসীদের মধ্যে গন্ডগোল লাগাতে চাইছে বিজেপি,” মণিপুর প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণ মমতার

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ২৭ মে: ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। তারপর থেকেই সমাজে মানুষের একাংশের মধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্কে গিয়ে নোট জমা দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে মানুষের একাংশের মধ্যে। এবার সেই ২০০০ টাকার নোট নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত যখন নেওয়া হয়, তখন তাঁর বাড়িতে ক’টা নোট ছিল, সেই কথাও জানালেন নিজেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেত্রী হয়েও, তাঁর সাধারণ মানের জীবনযাপন নিয়ে অতীতে বহু চর্চা হয়েছে বিভিন্ন মহলে। সাম্প্রতিককালে তৃণমূলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিতে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। সেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে কেন্দ্রের নোট প্রত্যাহারের ঘোষণার সময় ক’টি ২০০০ টাকার নোট ছিল জানেন?

আজকের শালবনিতে তৃণমূলে নবজোয়ারের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘আমি তো বাড়িতে আর অফিসে খুঁজে দেখলাম আটটা নোট বেরিয়েছে। চারটে অফিসে, আর চারটে বাড়িতে। অর্থাৎ, বুঝতেই পারছেন ওই নোট আমরা ব্যবহারই করি না। আমরা ছোট নোট বেশি ব্যবহার করি।’ একইসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর আরও বক্তব্য, ‘২০০০ টাকা আপনার কাছে থাকলেও ব্যাঙ্ক জমা নিচ্ছে না। দোকানদারের কাছে গেলে, দোকানদার ভয়ে ২০০০ টাকার নোট নিচ্ছে না। এটা তাহলে (কেন্দ্রের) আগে ভাবা উচিত ছিল না? ২০১৬ সালেই তো করলেন নোট বদল। তাহলে আজ আবার নোটবদল কেন? যদি করতেই হয়, তাহলে আগে অপশন তৈরি করে, জনগণকে সুবিধা দিয়ে তারপর করবেন। আমার তো সংশয় হচ্ছে, কোনও একটি রাজনৈতিক দল এই টাকাটি মজুত করে রেখে দিয়েছে।’ যদিও সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

‘কুড়মিদের নাম করে বিজেপির স্লোগান দিয়ে, তারাই অত্যাচার করেছে’ দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতার। গতকাল অভিষেকের কনভয়ে হামলার পর আজ শালবনির সমাবেশে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়েই এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘মন্ত্রীর গাড়িতেও ভাঙ্গচুর চালিয়েছে, আদিবাসী মহিলারা, তার গাড়িও ভেঙ্গেছে। আদিবাসী মেয়ের গায়েও হাত দিয়েছে বিজেপি, অভিষেকের উপর হামলাও করতে গিয়েছিল, অশান্তি ছড়িয়ে আর যাই হোক, বাংলাকে শেষ করা যাবে না। তৃণমূলকেও নয়। আদিবাসীদের জমি যাতে দখল না হয়, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা করেছি’। 

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার ঘটনায় সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। আক্রমণের সঙ্গে কুড়মিদের যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়েও চলছে জোর তরজা। এর মাঝেই কুড়মিদের আক্রমণ প্রসঙ্গে বিজেপিকে আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মণিপুরের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল নেত্রীর আক্রমণ, কুড়মি-আদিবাসীদের মধ্যে গন্ডগোল লাগাতে চাইছে বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *