আমাদের ভারত, ৭ জুলাই: পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাঙ্গনে একের পর এক র্যাগিং, ছাত্র- ছাত্রী নির্বিশেষে কলেজগুলিতে যৌন নির্যাতন, বিভিন্ন কলেজে তৃণমূলীকরণ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের আয় বহির্ভূত একাধিক সম্পত্তির বিষয়ে সরব হল বিজেপি।
সোমবার সল্টলেকের বিজেপি কার্যালয় থেকে সাংবাদিক বৈঠক করলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র দেবজিৎ সরকার। তাঁর উদ্ধৃতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র মিডিয়া বিভাগ জানিয়েছে, “আশ্চর্যের বিষয়, প্রায় প্রতিটি কলেজেই অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে তৃণমূলের অনুগতদের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পরিবেশ পুরোপুরি তৃণমূলীকরণ করা হয়েছে এবং সেগুলিকে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা বানানো হয়েছে।”
তৃণমূলের নেতারা কলেজের পরিচালনমণ্ডলির সদস্য, অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের নামে সর্বত্র দলীয় লোক বসিয়েছেন। সীতানন্দ কলেজ, উত্তরপাড়া কলেজ, রাজা পেয়ারীমোহন কলেজ, কাকদ্বীপ কলেজ— সব জায়গাতেই নিয়োগের নিয়মের তোয়াক্কা না করে তৃণমূল কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০২২-এর মধ্যে কাকদ্বীপ কলেজে সাতজন, রাজা পেয়ারীমোহনে দশজন তৃণমূল কর্মী সরাসরি নিয়োগ পেয়েছেন। এর প্রতিবাদে যাঁরা এগিয়ে এসেছেন, তাঁদের উপর হামলা হয়েছে।
হুগলির উত্তরপাড়ার কলেজ পরিচালনা সমিতিতে তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক দায় এড়িয়ে বলেছেন, আগে যারা ছিলেন, তাঁরাই এসব করেছেন।
এভাবে ২০১১ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত বাংলাজুড়ে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করে একদলীয় দখলদারি চালানো হচ্ছে। আশুতোষ কলেজ হোক বা কসবা ল’ কলেজ বা বালুরঘাট কলেজের ইউনিয়ন রুম হোক— সব জায়গায় বহিরাগত মহিলা এনে মদের আসর চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান বিভাগের রেজিস্ট্রারের ঘরে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির ঢুকে শিক্ষককে লাথি মেরে বের করে দিয়েছেন। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায়ও ভাগের টাকা নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছে। একটি কলেজে অনার্স সাবজেক্ট পেতে ৭০-৮০ হাজার টাকা ঘুষের অভিযোগ উঠছে। ছাত্রছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমার মতো র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটছে।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলিতে ৯১ হাজার ৪৫২টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৪ হাজার আবেদন পড়েছে। কেউ আর উচ্চশিক্ষা নিতে চাইছে না, কারণ সেখানে সিনিয়ররা টাকা আদায় করছে, রাজনৈতিক দাদাগিরি করছে। হাওড়ার নরসিংহ দত্ত কলেজে র্যাগিংয়ের নামে অশ্লীল ভিডিও ছড়াচ্ছে, প্রশাসন নির্বিকার।”