স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ৫ মে:
পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে মদের দোকান খুলেছিল, কিন্তু আজ সেই মদের দোকান বন্ধ করে দিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। নদিয়ার শিমুরালি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শিমুরালি বাজারের ঘটনা।
জানা গেছে, এই মদের দোকান নিয়ে এর আগেও অভিযোগ উঠেছিল। কারণ লকডাউন চলাকালীন মদের দোকান থেকে বেআইনিভাবে চড়া দামে মদ বিক্রি করা হচ্ছিল। তা নিয়ে প্রতিবাদও করা হয়। তারপরে ওই দেশি মদের দোকান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় পুলিশ প্রশাসন। এছাড়া তাদের অভিযোগ ছিল মদের দোকানটা জনবহুল এলাকায়, বাজারের মধ্যে। মন্দির এবং স্কুলের পাশে মদের দোকান হয়েছে এবং মদ্যপরা ওই মদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পথচলতি মহিলাদের উদ্দেশ্যে অশালীন মন্তব্য করে। তারপরই ঐ মদের দোকান সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এবার সরকার মদের দোকান খোলার কথা ঘোষণা করার পর গতকাল পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে ওই মদের দোকান খোলে বলে জানা যায়। কিন্তু এলাকার মানুষদের নিয়ে সম্মিলিত প্রতিবাদে বিজেপি কর্মী সর্মথকরা বৃহস্পতিবার ওই মদের দোকান বন্ধ করে দেয়।
নদিয়া জেলার বিজেপির সহ সভাপতি পঙ্কজ বসু জানান, আমরা বাংলা মদের বিরোধিতা করছি না, কিন্তু যেভাবে এই মদ বেশি দামে লোকে কিনছে তার বিরোধিতা করছি। এছাড়া লকডাউনে আমি বিজেপির তরফ থেকে যে যে বাড়িতে চাল, ডাল, আটা এবং বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী দিতে গেছিলাম আমরা দেখছি সেই সেই বাড়ির লোকেরা এসে মদ কিনছে। আর এখানে দেশি মদের দোকানের লাইসেন্স যখন দিয়েছিল তখন মন্দির স্কুল কিছুই দেখেননি, নেতাদের পকেটে ভরে গেছে লাইসেন্সও পেয়ে গেছে। আজ তৃণমূলের সমস্ত নেতারা এদেরকে বাহবা দিয়ে বাড়িয়েছে। আজকের দিনের সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষ কোন ভাবেই চাইছে না আবার সেই অকালপক্কতা ফিরে আসুক। একেই মহামারিতে কোনও ইনকাম নেই, হাতে পয়সা নেই, মানুষ খেতে পাচ্ছে না, বাচ্চাদের জন্য সামান্য লজেন্স বিস্কুট নিয়ে যেতে পারছে না তাদের স্বামীরা। এরপর যদি কোনও রকম ভাবে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে মদ কিনে খায় তাহলে তাদের বাড়ির লোকজনরা এবার গলায় দড়ি দেবে। ভেসে যাবে তো ওরা, না খেতে পেয়ে মরবে। গ্রামের লোকজন কেউ চাইছে না ওই মদের দোকান খুলুক। গ্রামের লোকেরা সবাই গরিব মানুষ তাই ভয় পাচ্ছে শাসকদলের বিরুদ্ধে কথা বলতে। তাই ওরা আমাদের দ্বারস্থ হয়েছিল। আমরা আজ প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করেছি। পুলিশ এসেছিল। আমি যতটা পেরেছি ওপর মহলে জানিয়েছি। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। এই সর্বনাশা মদের দোকান যতদিন না বন্ধ হবে ততদিন আমরা আন্দোলন করে যাব। আমরা এখানে এলাকাবাসীদের সাথে একমত, কোনভাবেই মদের দোকান এখানে চলতে দেবো না।