সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৩ ডিসেম্বর:
আক্ষরিক অর্থেই যেন উত্তর কলকাতার রাস্তায় গেরুয়া প্লাবন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরই তার প্রতিবাদে গত সপ্তাহে রাজ্য জুড়ে কার্যত ঝড় তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সিএএ’র সমর্থনে খুব একটা বড় মিছিল করেনি বিজেপি। দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরে বা ঠাকুরপুকুর থেকে বেহালায় কিছু মিছিল করা হলেও তেমন ভাবে কিছুই হয়নি। কিন্তু এ যেন ওস্তাদের মার শেষ রাতে! সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডার নেতৃত্বে বিপুল জনসমাগম নিয়ে মিছিল করলেন বিজেপি নেতা-নেত্রীরা।
দুপুর ২ টো নাগাদ ওয়েলিংটনের সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার শ্যামবাজারের জন্য সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে রওনা হয় বিজেপির মিছিল। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে অভিনন্দন জানাতেই এই মিছিল বিজেপির। হুড খোলা জিপের মাথায় ছিলেন বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা ও সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মিছিলে হাঁটলেন সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া সহ অন্যান্যরা। সেই মিছিলের শুরু তো রয়েছে, যেন শেষ নেই। অবিরাম চলছে তো চলছেই। মিছিল যখন শ্যামবাজার পৌঁছে গিয়েছে, তখনও মেডিক্যাল কলেজ পেরোয়নি মিছিলের শেষাংশ।
সাধারণ বিজেপি কর্মীরা তো ছিলেনই, সঙ্গে একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর ২১ জুলাইয়ের কায়দায় আদিবাসী নৃত্য, ছৌ, মুখোশ পরে নাচ, বাউল, কয়েকশো ঢাক, খোল, কর্তাল, দোতারা-সবমিলিয়ে রঙিন মিছিল। মহিলারা শাঁখ বাজিয়ে গান গেয়ে অন্য মাত্রা এনে দেন মিছিলে। এমনকি মুসলিম কিছু লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে মিছিলে বলতে বলতে যাওয়া হয়, মুসলিম ভাইদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আমরা আপনাদের সঙ্গে রয়েছি দেখুন মুসলিম ভাইয়েরা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। হাতে বিলি করা হয় লিফলেট।
বহুতল থেকে মনে হচ্ছিল, উত্তর কলকাতার ওপর দিয়ে যেন গেরুয়া স্রোত বয়ে যাচ্ছে। এত বিশাল মিছিল সফল ভাবে শেষ করে উচ্ছ্বসিত বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। আগামী নির্বাচনে বাংলা থেকে তারা যে ভাল ফল পাবেন, এমন আশাই প্রকাশ করেন সকলে। তবে সিএএ বিরোধী তৃণমূলের মিছিল এবং সমর্থনে বিজেপির মিছিলে শহরের রাজনৈতিক বাতাবরণ যে অন্য মাত্রা পেয়েছে, সে কথা বলাই যায়!