রাজেন রায়, কলকাতা, ১৪ ডিসেম্বর: ১০ বছরের শাসনকালে কাজের সাফল্যের খতিয়ান দিয়ে তৃণমূল সরকার পেশ করেছিল রিপোর্ট কার্ড। যদিও বঙ্গ বিজেপির দাবি, এর অনেক তথ্যই সঠিক নয়। শুধুমাত্র লোক দেখানো উন্নয়ন করে সার্বিক রাজ্যকে অনুন্নয়নের দিকে ঠেলে দিয়েছে তৃণমূল। সর্বভারতীয় মানচিত্র থেকে হারিয়ে গিয়েছে এক সময় ভারতের সোনার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। তাই এবার গত দশ বছরে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরতে ‘তৃণমূল ফেল কার্ড’ প্রকাশ করল বিজেপি। রাজ্যের অর্থনীতি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতার তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরল বিজেপি। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘টিএমসি ফেল কার্ড।’
সোমবার হেস্টিংসের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ‘তৃণমূল ফেল কার্ড’ বুকলেট প্রকাশ করলেন বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য ও রাজ্য নেতা শিশির বাজোরিয়া। এই রিপোর্ট প্রকাশের পর তারা একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন নিয়েও এই রিপোর্ট কার্ডের তথ্য প্রমাণ করেন দলের নেতা শিশির বাজোরিয়া। তিনি বলেন, ”প্রত্যেক বছর ধুমধাম করে বিজনেস গ্লোবাল সামিট হচ্ছে, কিন্তু বাংলায় লগ্নির চিহ্ন নেই। বাংলার অর্থনীতির পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। জিডিপি ৬.০৩ শতাংশ থেকে ৫.২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সরকারের কোনো জমি নীতিও এখানে নেই, এমনকি শিল্পে বিনিয়োগের পরিবেশ এখানে নেই।” সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, ”১০ বছরে তৃণমূল সরকারের শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মহিলা সুরক্ষা-সহ আরও অনেক বিষয়ে ব্যর্থতা ও বাংলার দুর্দশার কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে এই বুকলেটে।” তাঁর অভিযোগ, এনসিআরবি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, মহিলাদের উপর আক্রমণে বাংলা সারা দেশে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা এবং মহিলাদের উপর অ্যাসিড হামলায় রাজ্যের স্থান প্রথম।’
দলের রাজ্য মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাম আমলের শেষ দিকে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ছিল। তারপর তৃণমূল সরকারের প্রথম বছর ৩১৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়। কিন্তু এরপর থেকে আর বিনিয়োগ হয়নি। কর্মসংস্থান নিয়ে যা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। ১০ বছর আগে এখানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ২৫ হাজার টাকা ছিল। সেটা বেড়ে হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। রাজ্যের ঋণের পরিমাণ ৪ লক্ষ কোটির বেশি হয়ে গিয়েছে।’