BJP, Siuri, সিউড়ি আদালত থেকে জামিন পেয়ে ফের বিক্ষোভে বিজেপি

আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ৩ আগস্ট: তিলপাড়া জলাধারে ফাটল নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হন বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা সহ ২৬ জন বিজেপি কর্মী সমর্থক। রবিবার সিউড়ির বিশেষ আদালতে তাদের তোলা হলে আট জন বাদে সকলকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। একজনের দু’দিনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে সিউড়িতে তিলপাড়া জলাধারের স্তম্ভে ফাটল ধরা পড়েছে। ফলে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ওই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই প্রতিবাদে শনিবার আন্দোলনে নামে বিজেপি। শনিবার তারা সিউড়ি প্রশাসনিক ভবনের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। একজন বিজেপি কর্মী মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে মুখে কালো কালী ছড়িয়ে দেন। বিষয়টি জানতে পেরে ছুটে আসেন সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির পথ অবরোধের জায়গায় গেলে দুই দলের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি বেধে যায়। পুলিশ বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা সহ ২৬ জনকে গ্রেফতার করে। এনিয়ে দুটি মামলা হয়। একটি করেন উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, অন্যটি পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা রুজু করেন। বিজেপি নেতা কর্মীদের সারা রাত থানার মধ্যে আটকে রাখার পর রবিবার সিউড়ি বিশেষ আদালতে তোলা হলে বিচারক ধ্রুব সাহা সহ ১৮ জনকে জামিনে মুক্তি দেন।

মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কালী লাগানোর অভিযোগে সমরেশ ঘোষ নামে এক বিজেপি কর্মীকে ২ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। সাত জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

এদিকে জামিন পেয়েই ফের বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে বিজেপি। দলের রাজ্য সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার নেতৃত্ব এস পি অফিসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি।

জগন্নাথবাবু বলেন, “তিলপাড়া জলাধারে ৩০ মিটার স্তম্ভে ফাটল ধরেছে। অবৈধ বালি খননের জন্য জল নিচের দিকে না নেমে জলাধারে ধাক্কা মারছে। তার ফলে নিচের স্তম্ভের ভিত নড়ে গিয়েছে। ফাটল যখন অল্প ছিল তখন সেচ দফতরের বাস্তুকার এবং বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা পরিদর্শন করেন। তারা নির্দেশিকা দিয়ে যান ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে বালি উত্তোলন করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশিকার কোনরকম তোয়াক্কা না করে অবৈধ বালি ঘাট চলছে। সেচ দফতর যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জলাধার মেরামতি করছিল সেটা ব্যর্থ হয়েছে। ফাটল বেড়ে গিয়েছে। এই নিয়েই বিজেপি শনিবার আন্দোলনে নেমেছিল। ১৯৫১ সালে শুরু হওয়া ওই জলাধারে বীরভূম, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ আড়াই লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা হয় এই জলাধার থেকে। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে বর্ষার জল ধরে রাখা যাবে না জলাধারে। খারিফ মরশুমে সেচের জল পাবেন না কৃষকরা। সেই জন্যই বিজেপি আন্দোলন করতে নেমেছিল। সেই আন্দোলনে পুলিশের সহযোগিতায় তৃণমূলের হার্মাদরা হামলা চালায়। এদিন সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ আট জনকে আটকে রেখেছে। আমরাও তৃণমূলের হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু এখনও তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে আমরা এসপি অফিস ঘেরাও করেছি”।

ধ্রুব সাহা বলেন, “জলাধার সংস্কারের জন্য ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা প্রশাসনের মদতে তৃণমূলের পকেটে ঢুকেছে। তার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন”।

যদিও এদিন তৃণমূল কোর কমিটির বৈঠক ডাকেন অনুব্রত মণ্ডল। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কালী লাগানোর জন্য সোমবার জেলার সর্বত্র বিক্ষোভ মিছিল হবে। এছাড়া বাংলা ভাষা নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে। পরে অবশ্য পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *