আমাদের ভারত, ১০ ফেব্রুয়ারি, কোচবিহার: তুফানগঞ্জের দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের চুলকানি বাজার এলাকায় বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার নেতা কাজী রাহুল হোসেনের চাষের জমিতে লাগানো বীজতলা নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবারের ঘটনা ঘটার পর আজ বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের জেলা সভানেত্রী মালতি রাভা রায় সহ অন্যান্য নেতারা আক্রান্ত নেতার সঙ্গে দেখা করতে যান, সেখানে পৌছানোর আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা তাদের পথ আটকায়, এছাড়াও বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রতিবাদে প্রায় এক ঘন্টা দেওচড়াই মোড়ের কাছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিজেপি নেতা ও কর্মীরা। অবরোধে সামিল হন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও।
রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “এ রাজ্যে গণতন্ত্র নেই তার আবার প্রমাণ পাওয়া গেল। আমরা পুলিশকে জানিয়ে আক্রান্ত কর্মীর বাড়িতে যাচ্ছিলাম সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেস আমাদের আটকে দেয় আমাদের কর্মীদের মারধর করে। এর প্রতিবাদে আমরা পথ অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। কোচবিহার জেলা জুড়ে তৃণমূল গুন্ডাবাহিনী দিয়ে এই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। তবে বেশিদিন এই সন্ত্রাস চালানো যাবে না বলে তিনি দাবি করেন।
বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতি রাভা রায়, অভিযোগ করেন, “বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের সংখ্যালঘু মোর্চার নেতাকে একঘরে করে রেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তার জমিতেও চাষ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। অবশেষে বাইরে থেকে শ্রমিক নিয়ে এসে চুক্তির ভিত্তিতে রবিবার বোরো ধান লাগান ওই কর্মী। এরপরই জমিতে ট্রাক্টর নামিয়ে সেই জমি নষ্ট করে দেওয়া হয়”। তিনি বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক। পুলিশের উচিত দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেওচড়াই এলাকা মুসলিম অধ্যুষিত, এখানে কাজী রাহুল হোসেন বিজেপি করায় তাকে একঘরে করে রেখেছিল মুসলিম সমাজ। যার নেতৃত্বে ছিল স্থানীয় তৃণমূল মাতব্বরেরা। শুক্রবার তার বাড়ির সামনে মিছিল করে হুমকি দিয়ে যায় তৃণমূল। এর পরেই এই ঘটনা। ঘটনার পর যথেষ্টই আতঙ্কিত ওই বিজেপি কর্মী, বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না তিনি।
বিজেপি নেতাদের সেখানে ঢুকতে বাধা দেওয়ার পর দেওচড়াই মোড়ে অবরোধ করে বিজেপি কর্মীরা, তাই এক ঘন্টা অবরোধ চলে। এর ফলে ব্যাপক যানজট তৈরি হয় এই সড়কে। তবে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
বিজেপি সভানেত্রী মালতি রাভা রায় বলেন ‘আজ যেতে পারিনি কিন্তু ফের ওই কর্মীর বাড়ি যাব আমরা।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় দেওচড়াই এলাকায়। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি পার্থ প্রতিম রায় বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর তুফানগঞ্জ মহকুমার জুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে বিজেপি। আর এই ঘটনাটি নিয়ে তারা মিথ্যে অভিযোগ করছে”।