Nitin Naveen, BJP, নয়া প্রজন্মকে বিশেষ গুরুত্ব বিজেপির, দলের নয়া কার্যকরী সভাপতি নীতিন নবীন

আমাদের ভারত, ১৪ ডিসেম্বর: বিহার ভোটের পরেই বিহারের কেন্দ্রীয় সংগঠনে বড় রদবদলের সম্ভাবনা প্রবল হয়েছিল। জল্পনা বাস্তব হলো। দলের জাতীয় কার্যকরী সভাপতি হলেন বিহারের মন্ত্রী নীতিন নবীন। রবিবার দলীয় সংসদীয় বোর্ডের অনুমোদনে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।

বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিং একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বিজেপি সংসদীয় বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বিহার সরকারের মন্ত্রী শ্রী নীতিন নবীনকে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকরি সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে। নবীন বর্তমানে নীতিশ কুমার মন্ত্রিসভার এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী।

অনেক আগেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পদে জগৎ প্রকাশের মেয়াদ শেষ হয়েছে, কিন্তু নতুন সভাপতি নির্বাচন করেনি দেশের শাসক দল। রবিবার দলের পার্লামেন্টারি পার্ট একজন ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করল।

গত ছয় বছর বিজেপিতে কার্যকরী সভাপতি পদে কেউ ছিলেন না। তার আগে ২০১৯ সালের ১৭ জুন থেকে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত নাড্ডা নিজেই কার্যকরী সভাপতি ছিলেন, কারণ তৎকালীন সভাপতি অমিত শাহ ২০১৯ সালের মে মাসে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন। দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতিদের কাজ একসঙ্গে সামলানো কঠিন বলে নাড্ডাকে তার অধীনে কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছিল। ৮ মাস পর ২০২০-র জানুয়ারিতে তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ঘোষণা করা হয়। এবার নাড্ডার অধীনে নীতিন,কার্যকরী সভাপতি পদ পাওয়ায় অচিরেই সভাপতিত্ব নিয়ে ও তার উত্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যকরী সভাপতি পদে নিয়োগ বাধ্যতামূলক নয়। তবে সভাপতির দায়-দায়িত্ব বা তাদের চাপ কমাতে প্রয়োজনে কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করা হয়। নাড্ডা সর্বভারতীয় সভাপতি হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। সভাপতি হওয়ার পর তিনি মন্ত্রীত্বে থাকেননি, কিন্তু ২০২৪- এ নরেন্দ্র মোদী সরকারের তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তাকে আবার মন্ত্রী সভায় ফেরানো হয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যসভায় তাকে বিজেপির দলনেতাও করা হয়েছে। এক সাথে এত রকম দায়িত্ব তার পক্ষে সামলানো অসুবিধার, বা বিজেপিতে একজনের হাতে এতো দায়িত্ব একসাথে দেওয়া হয় না। তাই ২০২৪ সালে নাড্ডাকে মন্ত্রীসভায় ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গে সভাপতি পদে উত্তরসূরীর নামের জল্পনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত দেড় বছর নাড্ডাকে সরানোর পথে বিজেপি হাঁটেনি। এবার নীতিনকে কার্যকরী সভাপতি পদে বসিয়ে বিজেপি সংসদীয় বোর্ড বুঝিয়ে দিল, সভাপতি পদে নাড্ডা এখনো কিছুদিন থাকছেন। শাহর অধীনে কার্যকরী সভাপতি হিসেবে কাজ করার পরে নাড্ডা যেভাবে সভাপতি হয়েছিলেন, নীতিনও সেভাবেই কিছুদিন পর সভাপতি হবেন কি না তার দিকে তাকিয়ে এখন রাজনৈতিক মহল।

৪৫ বছরের নীতিন ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিহারের যুব মোর্চার সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন তার নির্বাচনী রাজনীতিতে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে তিনি বিধায়ক। একটানা তিনি জিতে আসছেন। ২০২১ সাল থেকে বিহারে মন্ত্রীত্ব সামলেছেন। এই মুহূর্তে তিনি বিহারের সড়ক মন্ত্রী। সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি বিহারের মন্ত্রিত্ব ছাড়তে চলেছেন বলে খবর। একাধারে মন্ত্রী এবং ছত্তিশগড়ে দলে নির্বাচনী প্রভারী হিসেবে নীতিন- এর কাজে সাফল্য নেতৃত্বের নজরে পড়েছে। এত কম বয়সেই বিজেপির সভাপতির দায়িত্বে, এর আগে কেউ আসেনি। মনে করা হচ্ছে বর্তমানে বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পরবর্তী প্রজন্মকে নেতৃত্বে তুলে আনতে চাইছেন। আর সেই কারণে নীতিনকে এই এত বড় দায়িত্বে তারা আনলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *