কুমারেশ রায়, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ৭ নভেম্বর:
১২ নভেম্বর ঘাটালে দাদা আসছেন। দাদা মানে শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। ওই দিন ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাই স্কুল ফুটবল ময়দানে তিনি বিজয়া সম্মেলন করবেন। কয়েকদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ঘাটাল কলেজে বিজয়া সম্মেলন করেছে। এর পরে আবার একই দলের এবং রাজ্যের মন্ত্রীর বিজয়া সম্মেলন হবে ১২ তারিখে।
একই রাজনৈতিক দলের একই কর্মসূচি দ্বিতীয়বার কেন জানতে চাওয়া হলে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক কৌশিক কুলোভী বলেন, এই কর্মসূচি দুর্গাপুর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে হচ্ছে। সেখানে থাকবেন জননেতা শুভেন্দু অধিকারী। অর্থাৎ দাদার অনুগামীদের উদ্যোগে এই কর্মসূচি কিনা তা জানতে চাওয়া হলে তিনি উত্তর সরাসরি এড়িয়ে যান।
বলার অপেক্ষা থাকে না, শুভেন্দু অধিকারী এখন রাজনৈতিক চর্চার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। দলের কোনো কর্মসূচিতে ইদানিং তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। তিনি মূল স্রোতের বাইরে সমান্তরালভাবে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় সমস্ত অনুষ্ঠান করছেন। তার মধ্যে জনসংযোগ আছে, আবার রাজনৈতিক কর্মসূচিও আছে। তৃণমূল কংগ্রেস নামটাই তার অনুষ্ঠানে থাকে না। এমনকি তার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও থাকে না। কেবলমাত্র শুভেন্দুবাবুর ছবি থাকে। তৃণমূল কংগ্রেস এর পরিবর্তে লেখা থাকে আমরা দাদার অনুগামী।
কিছুদিন আগে জোরদার চর্চা হয়েছিল তিনি নাকি বিজেপিতে যোগ দেবেন। এরপর তিনি নিজেই বলেছেন যে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে আছেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসে থেকেও তিনি যেন তৃণমূল কংগ্রেসে নেই। অন্তত তার হালচালে তাই মনে হচ্ছে। মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক।
ঘাটালেও আমরা দাদার অনুগামীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিছুদিন আগে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা রীতিমতো নজরকাড়া কর্মসূচি করেছিলেন। নজরে পড়ার মতো মিছিল এসেছিল দাদার অনুগামীদের। ঘাটালের বিভিন্ন স্থানে দাদার অনুগামীদের পোস্টার দেখা গেছে, যেখানে শুভেন্দুবাবুর জয় গান করা হয়েছে।
১২তারিখে বিদ্যাসাগর স্কুল মাঠে শুভেন্দুবাবুর বিজয়া সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার মাঠ পরিদর্শন করলেন তৃণমূল কংগ্রেসে শুভেন্দুবাবুর অনুগামী কয়েকজন নেতা। এদের মধ্যে আছেন তৃণমূলের জেলার সাধারণ সম্পাদক অজিত দে, কৌশিক কুলোভি এমপি প্রতিনিধি রাম পদ মান্না সহ অন্যান্যরা। মঞ্চ কোন দিকে হবে, মঞ্চের পরিকল্পনা ইত্যাদি সরেজমিনে তারা দেখেন।
এখন দেখার ১২ তারিখে কোন কোন নেতৃত্ব শুভেন্দুবাবুর সভায় থাকেন এবং ঐদিন স্পষ্ট হবে তৃণমূল কংগ্রেসের এক অদৃশ্য বিভাজন রেখা।