আমাদের ভারত, ২১ নভেম্বর: অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করে এমন কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষেই থাকেন না দেশের মানুষ। এসআইআর- এর বিরোধিতা করা বিরোধীদের এভাবেই আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। টেনে আনলেন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল।
শাহর দাবি, বিহারের ফলাফল প্রমাণ করে দিয়েছে দেশের মানুষ অনুপ্রবেশ পছন্দ করেন না। বিহারের পর ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর করার কাজ শুরু হয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল, পুদুচেরিতে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে আগামী বছরই। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটের আগে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসআইআর করা হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তি, ভুয়ো ভোটার ধরার লক্ষ্যেই এসআইআর করা হচ্ছে।
এমনি একাধিক যুক্তি তর্কে উত্তপ্ত রাজ্য তথা দেশের রাজনীতি। মামলাও চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এসআইআর স্থগিতের দাবিও উঠেছে। বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার’কে চিঠি লিখেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পনাহীন ভাবে এসআইআর প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। ফলে এটা বিপজ্জনকও হয়ে উঠছে অনেক ক্ষেত্রে। মমতার দাবি, অবিলম্বে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত করা হোক। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে জানিয়েছেন, এসআইআর প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নথি সম্পর্কেও অস্পষ্টতা থেকে গিয়েছে। এই প্রক্রিয়া কাঠামোগত ভাবে ত্রুটিপূর্ণ। মমতার অভিযোগ, বিএলওদের উপর অত্যাধিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ জনক। যদিও কমিশন এখনো মমতার চিঠির জবাব দেয়নি।
তবে এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবারো একবার এসআইআর- এর পক্ষে সওয়াল করলেন। শুক্রবার গুজরাটের ভুজে বিএসএফের অনুষ্ঠানে গিয়ে বিরোধীদের এক হাত নেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে দিন রাত কাজ করছে বিএসএফ। ভারতে অনুপ্রবেশ বন্ধ করা কেবল দেশের নিরাপত্তার জন্যই প্রয়োজন তাই নয়, বরং দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দূষিত হওয়া থেকে রক্ষা করাও এর উদ্দেশ্য। তাঁর অভিযোগ, কিছু রাজনৈতিক দল সরকারের অনুপ্রবেশ বিরোধী অভিযানকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। শাহর কথা, এসআইআর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকার শুদ্ধিকরণের যে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন সেটা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তাঁর কথায়, কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করার দায়িত্ব একমাত্র দেশের নাগরিকদের, অনুপ্রবেশকারীদের নয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, এসআইয়ের প্রক্রিয়া দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিরাপদ ও বিশুদ্ধ করবে। তিনি আরো বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল এসআইআর- এর বিরোধিতা করছে, আমি তাদের সতর্ক করতে চাই। ওরা অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করতে চাইছে, কিন্তু সেটা কখনোই হবে না।

