আমাদের ভারত, ২৬ আগস্ট:সমাজের পিছিয়ে থাকা দলিত শ্রেণীর মানুষদের গুরুত্ব দিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তারা ঠিক করেছিলেন দলিত পরিবারের সন্তানদের পুরোহিতের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন মন্দিরে তাদের পুজো করার সুযোগ করে দেওয়া হবে। সংগঠনের দাবী সেই কর্মযজ্ঞে তারা বিরাট সাফল্য পেয়েছেন। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৫ হাজার দলিত মানুষকে পুরোহিতের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে পরিষদের উদ্যোগে।
এই পাঁচ হাজার দলিত পুরোহিতের মধ্যে শুধু তামিলনাড়ুতেই আড়াই হাজার দলিত পুরোহিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে পরিষদ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জাতীয় মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই কর্মযজ্ঞে দক্ষিণ ভারতে তারা বড় সাফল্য পেয়েছেন। দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে বড় সংখ্যায় দলিত পুরোহিত রয়েছেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে শুধু তামিলনাড়ুতেই আড়াই হাজার দলিত মানুষকছ পুরোহিতের কাজে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশেও দলিত পুরোহিতের সংখ্যা অনেক। সব মিলিয়ে দেশের ৫ হাজার দলিত পুরোহিতকে প্রশিক্ষিত করে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বলে দাবি করেন তিনি।
একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় সরকার পরিচালিত মন্দিরে পৌরহিত্যের কাজে পেয়েছেন এই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দলিত পুরোহিতরা। পরিষদের দুটি শাখা এই কাজ করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় পূজার অনুষ্ঠানে পুরোহিতের কাজে আগ্রহীদের খুঁজে বের করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বৈদিক পূজা পদ্ধতি মেনে পুজো করা যেমন শেখানো হয়, তেমনই বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই প্রশিক্ষণ শেষ হলে সবাইকে শংসাপত্র দেওয়া হয়। তবে শংসাপত্র তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানমে দেওয়া হয়। শংসাপত্র দেওয়ার আগেই দেখে নেওয়া হয় যে সমস্ত ধর্মীয় বিধি মেনে , সব আচার পালনের যোগ্য হয়ে উঠেছেন কিনা ওই নব প্রশিক্ষিত দলিত পুরোহিত।
পরিষদের নেতা বিনোদ বনসাল সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ১৯৬৪ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গঠনের পাঁচ বছর পর থেকেই দেশ থেকে জাতপাতের বৈষম্য দূর করার কাজ শুরু করে পরিষদ। ১৯৬৯ সালে কর্নাটকে পরিষদের যে সম্মেলন হয় সেখানেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেখানেই সন্তরা ঘোষণা করেছিলেন সব হিন্দুই সমান। কেউ অচ্ছুত নয়। তিনি আরো জানান, ১৯৮৯ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে যখন অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি মন্দিরে শিলান্যাস হয়, তখন পৌরোহিত্য করেছিলেন দলিত সমাজের প্রতিনিধি কামেশ্বর চৌপালা।

