সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, বনগাঁ, ১২ আগস্ট: বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে মতুয়া সংঙ্ঘাধিপতি প্রাক্তন বিধায়ক মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের হাতে অযোধ্যায় রাম মন্দির ভূমি পুজোর প্রসাদ তুলে দিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্ব ক্ষেত্র সম্পাদক অমিয় সরকার। শুধু ঠাকুরনগরেই নয়, ভূমি পূজার প্রসাদ পাঠানো হল বাংলাদেশে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার অন্তর্গত ওড়াকান্দির পার্শ্ববর্তী সফলাডাঙ্গা গ্রামে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্ম ভিটেতে।
সম্প্রতি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে দিল্লিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে মতুয়া সংঘের প্রতিনিধি হিসাবে শান্তনু ঠাকুরকে আহবান জানিয়ে তাঁর হাতে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভূমি পুজোর প্রসাদ তুলে দেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি অলক কুমার। এছাড়া দিল্লিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদর দফতরেও সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের হাতে অযোধ্যায় রাম মন্দির ভূমি পুজোর প্রসাদ তুলে দিয়ে ছিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জাতীয় সভাপতি অলক কুমার। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে ছিলেন, মতুয়া মহাসংঘের মাটি এবং জল অযোধ্যার ভূমি পুজোয় অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে এবং তাঁরা ভবিষ্যতে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য সাহায্য চাইতে শ্রীধাম ঠাকুর বাড়িতে যাবেন বলেও তিনি ঘোষণা করেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রায় ১৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল প্রথমে পেট্রাপোল সীমান্তে আসেন। সেখানে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের হাতে ভূমি পুজোর প্রসাদ তুলে দেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্ব ক্ষেত্র সম্পাদক অমিয় সরকার। এরপর ঠাকুরনগরে ঠাকুরবাড়ি যান। সেখানে মতুয়া সংঙ্ঘাধিপতি মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের হাতে অযোধ্যায় রাম মন্দির ভূমি পুজোর প্রসাদ তুলে দেন।
ছবি:বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে প্রসাদ।
ঠাকুরবাড়ির জল এবং মাটি ভূমি পূজায় ব্যবহার করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছিল মতুয়া সম্প্রদায়ের একটি গোষ্ঠী। তাদের দাবি মতুয়া সমাজকে অসম্মান করা হয়েছে।
এব্যাপারে প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, সত্যকে চাঁপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ঠাকুর বাড়ির মাটি, জল নেওয়া হয়নি। তার কোনও রিসিভ কপি এখনও দেখাতে পারেনি। ওরা মতুয়া ভক্ত সহ ঠাকুরবাড়িকে অপমান করেছে।
ছবি: ঠাকুরবাড়িতে পৌছে দেওয়া হল প্রসাদ।
ঠাকুরবাড়ির জল ও মাটি দলিত সম্প্রদায়ের বলে রাম মন্দির নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হয়নি এই তথ্য সম্পূর্ণ খণ্ডন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্ব ক্ষেত্র সম্পাদক অমিয় সরকার বলেন, এটা একটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত ষড়যন্ত্র। রাম মন্দির নির্মাণের কাজে হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরের মাটি এবং কামনা সাগরের জল ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভগবান শ্রীরামচন্দ্র কোনও জাত পাতের নিষেধ মানতেন না। তিনি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতেন। এই ধরনের কুরুচিকর রটনা ভারতীয় হিন্দু সমাজকে দ্বিধা বিভক্ত করার এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের মনে ভগবান শ্রীরাম সমন্ধে ভান্ত ধারণা তৈরি করার জন্য করা হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তীব্র ভাষায় এর নিন্দা জানাচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের মহা সঙ্ঘাধিপতি মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর ও সঙ্ঘাধিপতি সুব্রত ঠাকুরের বলেন, ধর্মকে নিয়ে যারা রাজনীতি করছে বা ভুলভাল গুজব ছড়াছে এই গুলো ঠিক না। যে কথাটি বিভিন্ন মহলে ঘুরাঘুরি করছিল তা যে ভুলধারনা আবারও তা ভাঙিয়ে দিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ।