কৃষি উপকরণের উপর থেকে জিএসটি সরিয়ে নেওয়া ও জিএম বীজের উৎপাদন বন্ধের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি ভারতীয় কিষাণ সংঘের

আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৪ ফেব্রুয়ারি: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিল ভারতীয় কিষাণ সংঘ। গতকাল ভারতীয় কিষাণ সংঘের ই-মেইল থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ই-মেইল মারফত এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

কিষাণ সংঘ ফেব্রুয়ারি ২৩ এর ৭-৯ তারিখ পর্যন্ত রাজস্থানের খাটুশ্যামে চলা ‘অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা’ থেকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল যে, আগামী ১৮/০২/২৩ তারিখ জিএসটি কাউন্সিলের যে বৈঠক হতে চলেছে, সেখানে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের প্রধানদের কৃষি উপকরণের উপর থেকে জিএসটি তুলে নেবার অনুরোধ করার জন্য বলা হবে। যাতে তারা উক্ত বিষয় জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে তোলেন। কারণ কৃষকদের একদিকে উচ্চহারে(৫-২৮%) জিএসটি দিয়ে কৃষি উপকরণ কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে তারা ফসলের লাভকারী মূল্য পাচ্ছেন না। অথচ করোনাকালীন সময়ে কৃষকরা তাদের নিজেদের শরীরের কথা না ভেবে সারা দেশের মানুষের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন, কিন্তু সেইসব কৃষকদের দুর্দশা মিটছে না। যেহেতু কৃষি বিষয়টির বেশিরভাগই রাজ্যের তালিকায় পড়ে এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে কৃষকদের চাষাবাদ করতে হয় সেইজন্য কৃষকদের কৃষিকাজের সুবিধার জন্য কৃষি উপকরণের উপর থেকে জিএসটি সম্পূর্ণ সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

সরকারি তথ্য বলছে যে, কৃষকদের উৎপাদিত প্রায় সব ফসলেই আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু তাতেও রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো হেলদোল নেই। কৃষকরা আর কতদিন আত্ম বলিদান করবেন? রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের কথা ভাবুক, না হলে কৃষকরা সংঘবদ্ধ ভাবে সরকারকে ভাবতে বাধ্য করবে বলে ‘ভারতীয় কিষাণ সংঘ’ প্রস্তুতি যে নিচ্ছে, তা গত ১৯/১২/২২ তারিখ দিল্লির রামলীলা ময়দানে হওয়া ‘কিষাণ গর্জনা র‍্যালি’র থেকেই ‘অখিল ভারতীয় কিষাণ সংঘ’-এর সম্পাদক মোহিনী মোহন মিশ্র পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন।

পাশাপাশি এদিন জিএম বীজের উৎপাদন ও তার ব্যবহার বন্ধ করার জন্যও ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। জিএম বীজ দেশি বীজের প্রচলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। শুধু তাই নয়, এতে ক্যান্সার ও অন্যান্য মারণ রোগ বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষদের পুরুষত্ব হীনতা বৃদ্ধি পাবে বলে প্রকাশ আছে। ভারতীয় কিষাণ সংঘের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়েছে। এই বিষয়ে যথাযথ গবেষণা না করেই কেন্দ্রীয় সরকার জিএম বীজের উৎপাদন ও চাষের অনুমতি যে দিয়েছে তার যথেষ্ট প্রমাণ ভারতীয় কিষাণ সংঘের কাছে আছে বলে অখিল ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মোহিনী মোহন মিশ্র জানিয়েছেন। সেই জন্য ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের পক্ষ থেকেও এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জিএম বীজ বন্ধ করার জন্য গতকাল ই-মেইল করা হয়েছে কিষাণ সংঘের ই-মেইল আইডি থেকে।

এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতীয় কিষাণ সংঘের অখিল ভারতীয় কার্যকারিণী সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সভাপতি কল্যাণ কুমার মন্ডল জানান যে, “কৃষি উপকরণের উপর থেকে জিএসটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আমরা আশকারি যে উনি জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে উক্ত বিষয়টি তুলে ধরবেন। পাশাপাশি জিএম বীজের উৎপাদন বন্ধ করার অনুরোধও আমরা করেছি মুখ্যমন্ত্রীকে। সরকার যদি আমাদের কথা না শোনে তাহলে আমরা পরবর্তীকালে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *