Gopastami, BKS, গোপাষ্টমী পালন করল ভারতীয় কিষাণ সংঘ

পারুল খামারিয়া, আমাদের ভারত, কলকাতা, ৯ নভেম্বর: আজ ২৩ শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দের কার্তিক শুক্লা অষ্টমী তিথি। এই তিথিতে সনাতনীরা গোপাষ্টমী পালন করেন সারা ভারত ও বিশ্বজুড়ে। সমগ্র দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আজ পশ্চিমবঙ্গজুড়ে গোপাষ্টমী পালন করল ভারতীয় কিষাণ সংঘ। এই সংগঠনের চারটি অবশ্য পালনীয় দিনের মধ্যে গোপাষ্টমী অন্যতম।

এদিন সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলাজুড়ে শুরু হয় গো-মাতা পূজন। এদিন গো-মাতাকে স্নান করিয়ে, তার গলায় মালা, শিঙে তেল, মাথায় সিঁদুর; তার পায়ে তিল, জল, ফুল ইত্যাদি দিয়ে পুজো করা হয়। তারপর প্রদীপ দিয়ে আরতি করা হয়। গো-মাতাকে এদিন তার পছন্দের ভালো ভালো খাবার দেওয়া হয়।

শাস্ত্রে নির্দেশিত সাত মাতার অন্যতম গো-মাতা। তাই গো-মাতার পুজো করা হয় এই তিথিতে। এই গোপাষ্টমীতেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ প্রথম গোচারণে গেছিলেন। এদিনই তিনি রাধারাণীর শ্রীচরণ কমল দর্শন করেছিলেন। ভারতীয় সমাজে এদিনের গুরুত্ব অবর্ণনীয়।

এই গোপাষ্টমী পালন নিয়ে ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সাধারণ সম্পাদক আশিস সরকার জানান যে, “ভারতীয় কিষাণ সংঘের চারটি অবশ্য পালনীয় দিনের মধ্যে গোপাষ্টমী একটি। বলদ গরু যেমন চাষের কাজে সহায়তা করে তেমন গাভীরা দুধ দিয়ে মানুষের জীবন ধারণে সাহায্য করে। দুধ থেকে দই, ঘী, পনীর, মাখন, ছানা, মিষ্টি ইত্যাদি তৈরি হয়। তাই গো-মাতার গুরুত্ব আমাদের জীবনে অপরিসীম বলেই ভারতীয় কিষাণ সংঘ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে গোপাষ্টমী পালন করে থাকে।”

ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সভাপতি অনিমেষ পাহাড়ি বলেন, “দেশি গো-মাতা পালন করতে হবে আমাদের। দেশি গো-মাতার দুধ A2 গুণ সম্পন্ন, যা খেলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। কিন্তু বিদেশি গরুর দুধ A1 গুণ সম্পন্ন, যা খেলে ক্যান্সার বা অন্যান্য মারণ রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে৷ তাই ভারতীয় কিষাণ সংঘ দেশী গো-মাতা পালনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।”

ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের প্রচার প্রমুখ ও ‘ভারতীয় কিষাণ বার্তা’র সম্পাদক মিলন খামারিয়া জানান যে, “গো-মাতা রক্ষা ও দেশি গো-মাতা পালন করার জন্য আমরা মানুষকে সচেতন করছি। যে গো-মাতার দুধ খেয়ে আমরা নিজেদের শরীর গঠন করেছি, সেই গো-মাতা পালন বা রক্ষা করাকে এক শ্রেণির মানুষ হেয় করে বা তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে দেখেন অথচ কুকুর পোষাকে সম্ভ্রান্তের লক্ষণ ভাবেন, এ অত্যন্ত দু:খের। কুকুরের দুধ তো আর মানুষ খায় না। সমাজের মানুষের ভাবনার পরিবর্তন করার জন্য ভারতীয় কিষাণ সংঘ কাজ করে চলেছে।”

ভারতীয় কিষাণ সংঘের অখিল ভারতীয় কার্যকারিণী সদস্য কল্যাণ কুমার মন্ডল বলেন, “গো-মাতা পালনকে গুরুত্ব দিতে হবে। গোবর সার তৈরি করে তা চাষের কাজে লাগাতে হবে। গো-মূত্র থেকে জৈব কীটনাশক তৈরি করে তা জমিতে ব্যবহার করতে হবে। দেশি গো-মাতা পালনে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে, সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। আইন করে গো-হত্যা বন্ধ করতে হবে। জৈব কৃষিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করুক সরকার। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ভারতীয় কিষাণ সংঘ এই দাবি করছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *