আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৫ সেপ্টেম্বর: পথ দুর্ঘটনায় জখম এক ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করেছিলেন ভগবানপুর-১ ব্লকের কাজলাগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক। এরই প্রতিবাদে আচমকাই কর্তব্যরত চিকিৎসককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ওই চিকিৎসককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি চিকিৎসকের। এর ফলে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা যে কতটা অসুরক্ষিত তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন জখম চিকিৎসক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, এদিন বেলার দিকে ভগবানপুর বাজকুল সড়কে একটি মোটর বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এই ঘটনায় জখম বাইক আরোহীকে নিয়ে কাজলাগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান তাঁর পরিচিত কয়েকজন। সেই সময় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত যুবকের চিকিৎসা করেন। এরপর পরীক্ষা করে তাঁরা জানতে পারেন আহত যুবকের আঘাত গুরুতর। তাঁকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তাম্রলিপ্ত জেলা সদর মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে স্থানান্তর করে দেন। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় রোগীর আত্মীয়দের একাংশ।
তাঁরা ওই চিকিৎসকের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরই মাঝে আচমকাই কয়েকজন ওই চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন। তাদের মারে চিকিৎসক চেয়ার থেকে উলটে পড় যান। এরপর যাওয়ার সময় হামলাকারীরা চিকিৎসককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যান বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার খবর পেয়েই ভগবানপুর থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। চিকিৎসকের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
কাজলাগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক মিন্টু দে জানান, “বেলা দেড়টা নাগাদ নার্স ফোন করে জানান, বাইক দুর্ঘটনায় জখম একজন রোগী এসেছে। খবর পেয়েই আমি ছুটে আসি। রোগীকে পরীক্ষা করেই দেখি ওই ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁর কাঁধের হাড় ভেঙ্গেছে। রোগীর এক্সরের পাশাপাশি তাঁকে স্পেশাল চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু কেন আমি স্থানান্তর করেছি সেই নিয়েই স্থানীয় কয়েকজন আমাকে বেধড়ক মারধর করে। এদের হামলায় একটি কানে শুনতে সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসক জানান, “এই ঘটনার পর আমি আতঙ্কিত। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করতে ভয় পাচ্ছি। ওরা আমাকে হুমকি দিয়েছে প্রাণে মেরে ফেলবে। সবটাই পুলিশকে জানিয়েছি” বলে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন।