আমাদের ভারত, ২২ আগস্ট: পরীক্ষা হবার ১১৭ দিন পর শেষ পর্যন্ত শুক্রবার রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় পর ফল প্রকাশের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, জয়েন্টের স্থানাধিকারিরা কেউই আর রাজ্যে নেই, কলেজে ভর্তি হবার জন্য। সকলেই প্রায় অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছেন পড়াশোনা করার জন্য। এই ঘটনাকে তিনি মেধা পলায়ণ বলে দাবি করে এর জন্য রাজ্য সরকারের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শুক্রবার রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে মেধা তালিকায় থাকা অনেক ছাত্র ছাত্রী উচ্চ শিক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য ছেড়েছেন। অনেকেই একরকম বাধ্য হয়ে রাজ্য ছেড়েছেন। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে সাধ্যের বাইরে গিয়ে সন্তানকে বেসরকারি কলেজে ভর্তি করেছেন। তাঁর কথায়, এই ঘটনা তৃণমূলের আমলে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার ভয়াবহ পতনকে প্রকাশ্যে এনেছে।
তিনি বলেন, “১১৭ দিনের দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর আদালতের হস্তক্ষেপে অবশেষে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফল প্রকাশিত হলো। কিন্তু এই ফলাফল নগ্ন করে দিয়েছে তৃণমূলের রাজত্বে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার ভয়াবহ পতনকে। মেধাতালিকার ২য়, ৩য় ও ৪র্থ স্থানাধিকারীরা আজ আর বাংলায় নেই, তাঁরা ইতিমধ্যেই ভিন রাজ্যে চলে গেছেন উচ্চশিক্ষার জন্য। এমনকি প্রথম স্থানাধিকারীর মধ্যেও উচ্ছ্বাস নেই।”
এই সবকিছুর জন্য সুকান্ত মজুমদার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণ নীতিকে দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, “এই মেধা পলায়নের একমাত্র কারণ মুখ্যমন্ত্রীর নির্লজ্জ তোষণনীতি। রাজ্যের শিক্ষার্থীরা আশাহত, অভিভাবকরা উৎকণ্ঠিত, পরিবারগুলো বাধ্য হয়েছে সাধ্যের বাইরে খরচ করে সন্তানদের বেসরকারি কলেজে ভর্তি করাতে। অধিকাংশই আবার উচ্চশিক্ষায় ভালো সুযোগের আশায় রাজ্যের বাইরে চলে গেছেন।”
তিনি জানিয়েছেন, “তৃণমূলের শিক্ষা-বিরোধী শাসনে শুধু মেধাবীরাই নয়, মধ্যমেধার শিক্ষার্থীরাও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেই রাজ্য ছাড়ছে। তোষণের স্বার্থে তৈরি হওয়া ফল প্রকাশে বিলম্ব এই সঙ্কটকে আরও তীব্র করেছে। সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।”
বাংলার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আজ ভিন রাজ্যে ভেসে যাচ্ছে। বাংলার শিক্ষার উপর আস্থা ভেঙে পড়েছে। আর এর জন্য দায়ী একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যর্থ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও তোষণনির্ভর শাসন।