বঞ্চিত করা হচ্ছিল গরিবদের! রেশনে দুর্নীতি, তদন্তের নির্দেশ বিডিওর

আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২ এপ্রিল: রেশনে অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা কার্ড হোল্ডারদের দেওয়া হচ্ছে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবার ও বিশেষ পরিবারের খাদ্য সামগ্রী। দীর্ঘ দিন ধরে এভাবেই উপভোক্তাদের বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে মল্লারপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালা গ্রামের রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে। সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রেশন ডিলারের ছেলে প্রভাত মণ্ডল। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও গোরাচাঁদ বর্মণ।

মল্লারপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালা গ্রামে জিতেন্দ্র নাথ মণ্ডলের নামে এক রেশন ডিলার রয়েছেন। যদিও রেশন সামগ্রী উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেন তার ছেলে প্রভাত মণ্ডল। অভিযোগ, অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা কার্ড হোল্ডারদের (এএওয়াই) দেওয়া হচ্ছে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবার ও বিশেষ পরিবারের (পিএইচএইচ এবং এস পি এইচ এইচ) খাদ্য। কাউকে কাউকে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার সামগ্রী দিয়ে বাকি সামগ্রী আত্মসাৎ করছে। রেশন ডিলার থেকে খাদ্য সুরক্ষা যোজনার কার্ডে এভাবেই নিজের মন মতো লিখে উপভোক্তাদের বঞ্চিত করে আসছিলেন ওই রেশন ডিলার। এমনকি নিজে অবস্থাপন হলেও তার নিজের কার্ড রয়েছে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবারের।

বিশেষ করে আদিবাসী মানুষদের অশিক্ষার সুযোগ নিয়ে অসৎ উপায় অবলম্বন করে আসছিলেন ওই ডিলার। জল্পা মুর্মু, মুনি মুর্মুদের অন্ত্যোদয় কার্ড থাকলেও তাদের এতদিন দেওয়া হয়েছে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবারের খাদ্য সামগ্রী। ফলে পরিবার পিছু মাসে যেখানে ১৫ কেজি চাল, ২০ কেজি গম, ১ কেজি চিনি দেওয়ার কথা, সেখানে তাদের দেওয়া হচ্ছিল ২ কেজি চাল, ৩ কেজি গম। বিষয়টি জানতে পেরে আদিবাসীদের রেশন ডিলারের কাছে জমায়েত হন বেশ কিছু মানুষ। চাপে পড়ে তাদের একমাসের চাল দিতে বাধ্য হন ডিলারের ছেলে প্রভাত মণ্ডল।

জল্পা, মুনি মুর্মুরা বলেন, “প্রতিমাসে আমাদের কম চাল গম দিয়ে এসেছে। কিন্তু এবার ঝামেলা করায় একদিন পরে বকেয়া সামগ্রী দিয়েছে”। এদিকে সংবাদমাধ্যম চেপে ধরতেই প্রভাতবাবু খাদ্যসামগ্রীর কার্ডে লেখা অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবার কেটে দিয়ে অন্ত্যোদয় লিখে দেওয়া হয়। প্রভাতবাবু বলেন, “ভুল করে হয়ে গিয়েছে”। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও গোরাচাঁদ বর্মণ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর খাদ্য দফতরের আধিকারিককে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে”। ফুড সাপ্লাই ইনস্পেক্টর রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিডিও সাহেবের নির্দেশ পাওয়ার পর এলাকায় গিয়ে সমস্ত মানুষকে সঠিক সামগ্রী দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *