আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৮ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর এক ‘ঘৃণ্য’ মন্তব্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কলকাতায় বাংলাদেশ (মাইগ্রেন্ট) কমিউনিটি ইন ইন্ডিয়ার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ, ছোট পথসভা হয়। দেওয়া হয় বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশ্যে স্বারকলিপি।
জাহাঙ্গীর আলম সম্প্রতি বাংলাদেশের সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে নিয়ে অবমাননাকর, আপত্তিকর ও সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেছেন। তিনি দাবি করেন যে, “দুর্গাপূজায় মদ ও গাঁজার আসর বসানো যাবে না।” তাঁর এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও কটূক্তিমূলক মন্তব্য শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সকল সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করেছে।
কর্মসূচির মূল ধাপসমূহ—
• প্রথম ধাপ: কলকাতার কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ সমাবেশ ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তারা বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্য উগ্র মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রশ্রয় দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী।
• দ্বিতীয় ধাপ: সমাবেশ শেষে সংগঠনের প্রতিনিধি দল কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনে যান এবং বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে একটি স্বারকলিপি দেন।
• বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে উপদূতাবাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উক্ত স্বারকলিপি গ্রহণ করে বিষয়টি ঢাকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
সংগঠনের দাবিসমূহ—
১. বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক প্রদত্ত সাম্প্রদায়িক ও অবমাননাকর মন্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. বাংলাদেশের ও বিশ্বের সকল সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের নিকট প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
৩. বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৪. প্রধানমন্ত্রী প্রফেসর ড: ইউনুস-এর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উচিত হবে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রশ্রয় না দিয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অক্ষুণ্ণ রাখা।
বক্তারা বলেন, এ ধরনের বক্তব্য শুধুমাত্র সনাতন ধর্মালম্বীদের হৃদয়েই আঘাত হানে না, বরং দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকেও ক্ষুণ্ণ করে। দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাংলাদেশ ও ভারতের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ। ফলে এই উৎসবকে অপমান করা মানে সমগ্র বাঙালি সংস্কৃতিকে অপমান করা।
‘বাংলাদেশ (মাইগ্রেন্ট) কমিউনিটি ইন ইন্ডিয়া’-র পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয় যে, সনাতনী ধর্মীয় উৎসবকে অপমান করার যে কোনো প্রয়াস কখনোই বরদাশত করা হবে না।
‘বাংলাদেশ (মাইগ্রেন্ট) কমিউনিটি’-র অন্যতম প্রধান কার্যকর্তা পদ্মভূষণ ড: নারায়ণ চক্রবর্তী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বারকলিপিটি দেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি অরুণ চন্দ্র ঘোষ, বিভিন্ন সাংগঠনিক নেতা ও সমাজসেবীরা।