“বাংলা সহায়তা কেন্দ্র” দেখতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল

আমাদের ভারত, ১৩ মার্চ: বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রকল্পের অন্তর্গত ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস এবং ডিজিটাল সেন্টারের এক চার সদস্যের প্রযুক্তিবিদের দল প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সংগ্রহের জন্য সোমবার বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপনা শাখা (পিএমইউ) ও হাওড়া জেলার কয়েকটি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র দেখতে আসেন। মত বিনিময় করেন নাগরিকদের সাথে।

নবান্ন থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের অভূতপূর্ব সাফল্য আমাদের দেশে একটি অনন্য নজির দেখিয়েছে। এই নজির বাংলাদেশ-সহ আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সোমবার বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রতিনিধিদের একটি দল, বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের পিএমইউ ঘুরে দেখেন। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়া এই প্রতিনিধি দল হাওড়া জেলার কয়েকটি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শন করে প্রাথমিক অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করে। সেখানে তাঁরা নাগরিকদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

পশ্চিমবঙ্গ সর্বদাই নাগরিকবৃন্দের চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অগ্রগামী। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই দূরদৃষ্টিতে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজ্য সরকার এই উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি ওয়েব পোর্টাল https://bsk.wb.gov.in/ এর মাধ্যমে নাগরিকদের বিনামূল্যে সরকারি পরিষেবা প্রদানের জন্য বাংলা সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। কেন্দ্রগুলি স্থাপনের উদ্দেশ্য হল পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীদের মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন দূর করা এবং রাজ্যের প্রত্যন্ত কোণে কোণে সুশাসনের সুবিধাগুলি প্রসারিত করা।

এই কেন্দ্র স্থাপনের আড়াই বছর পরে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলি রাজ্যের সকল প্রাথমিক স্তরে সুশাসনের সমার্থক হয়ে উঠেছে। এপর্যন্ত প্রায় ৪.৭০ কোটি মানুষ ৯.৫০ কোটি বিভিন্ন প্রকার পরিষেবা পেয়েছেন। এই পরিষেবাগুলির মধ্যে ৯২% গ্রামীণ এলাকার অধিবাসীদের দেওয়া হয়েছে, পরিষেবা প্রাপকদের মধ্যে ৩৯% মহিলা।

বর্তমানে রাজ্যজুড়ে ৩৫৬১টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র বিভিন্ন সরকারি অফিস থেকে কাজ করে চলেছে। মানুষের চাহিদা অনুসারে আরও ১৪৬১টি অতিরিক্ত বাংলা সহায়তা কেন্দ্র বিভিন্ন এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে। ই-ওয়ালেট ব্যবস্থার দ্বারা বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল, জমির মিউটেশনসহ বিভিন্ন ধরনের বিল দেওয়া যাচ্ছে।

এর ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলির কার্যকারিতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে মাসিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ইতিমধ্যে ২০ কোটি টাকা ছুঁয়েছে। এখন আমরা দিনে প্রায় ১ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টা করছি।

অন্যদিকে, বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থেকে বেশ কিছু প্রধান সরকারি পরিষেবার ইউনিক আইডি সম্বলিত সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের ডিজিটাল স্বাক্ষর করা শংসাপত্র, যেমন- রেশন কার্ডের শংসাপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, দলিলের প্রত্যয়িত কপি, মৃত্যু এবং জন্মের শংসাপত্র, বিবাহ নিবন্ধন শংসাপত্র, জমির খতিয়ান, জাতি সংক্রান্ত শংসাপত্র, নিউটাউন-রাজারহাটের জমির তথ্য ও মিউটেশন শংসাপত্র প্রদান করা হচ্ছে।

বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থেকে আধার তালিকাভুক্তি ও হালনাগাদ করনের কার্যক্রম (০ থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্য) রাজ্যের জনগণকে প্রভূত সাহায্য করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই জন্য ১০০০টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। আরও ১১০০টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে আধার সংক্রান্ত কাজ শুরু করার পরিকল্পনা চলছে। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের আধার সংক্রান্ত কাজের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে সার্টিফিকেট শংসাপত্র দেওয়ার কাজটি সমান্তরালভাবে চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *