জে মাহাতো, ঝাড়্গ্রাম, ১৫ নভেম্বর:
মানভূম তথা বাংলা সীমান্তবর্তী জঙ্গলমহলের পাহাড় জঙ্গল ঘেরা ভূখণ্ডের কৃষিজীবীদের উৎসব বাঁদনা শুরু হয়েছেl বন্দনা থেকে বাঁদনা কথাটি এসেছেl জল, জঙ্গল, জমিন কেন্দ্রিক জীবন-যাপনে আদিবাসী কুড়মি সমাজে গবাদিপশু ও কৃষি যন্ত্রপাতির অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এই জনগোষ্ঠীর মানুষ তাই সেইসব কৃষি হাতিয়ারগুলিকে ধন্যবাদ জানাতে বন্দনা বা বাঁদনা উৎসব পালন করে।
আদিবাসী কুড়মি জাতির প্রাধান্যের কারণে এই উৎসব আজ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মধ্যেও প্রভাব ফেলেছেl কার্তিক মাসের অমাবস্যার দিন থেকে চার দিনের এই উৎসব হয়l অমাবস্যার দিন গরু জাগানো হয়l প্রতিটি গ্রামে একদল মানুষ ঢোল, ধামসা, মাদল বাজিয়ে সারারাত বাড়ি বাড়ি গিয়ে গবাদিপশুকে জায়গায়l এই গরু জাগানো পার্টিকে ঝাঙ্গড়িয়া বলা হয়। গরু জাগানোর জন্য গৃহস্থরা এদেরকে পিঠে পুলি খাওয়ানl বখশিশ হিসাবে টাকাও দেওয়া হয়l
এর পরের দিন গরইয়াl এদিন গরুকে পুজো করা হয়l গরুর গলায় ধানের মালা পরিয়ে শিংয়ে সিঁন্দুর মাখিয়ে বন্দনা করা হয়l পরের দিন গবাদি পশুদের শক্তি পরীক্ষার জন্য তাদের খুঁটিতে বেঁধে ঢোল ধামসা বাজিয়ে চামড়া দিয়ে খেলানো হয়l একে বলে খুঁটান পরবl এই সময় অহিরা গীত গাওয়া হয়l রাঁচি থেকে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর পর্যন্ত এই উৎসব পালন করে থাকে আদিবাসী কুড়মি সমাজের মানুষl