আমাদের ভারত, ৪ নভেম্বর: মহাকুম্ভ মেলায় মুসলিমদের দোকান দেওয়া চলবে না। হরিদ্বার থেকে সাধুসন্তদের শীর্ষ সংস্থা অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদ এই দাবি জানিয়েছে। আগামী বছর মকর সংক্রান্তি থেকে প্রয়াগ রাজে মহাকুম্ভ শুরু হতে চলেছে।
নীরঞ্জনী আখড়ার প্রধান স্বামী রবীন্দ্র পুরী জানিয়েছেন, প্রয়াগ রাজে অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সাম্প্রতিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তারা মহুকুম্ভে মুসলিমদের দোকান দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি চান। তাঁর কথায়, এখন সরকার সিদ্ধান্ত নিক কারা দোকান খুলতে পারবে। তিনি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, যদি মুসলমানরা কুম্ভ মেলায় খাবার-দাবার বিক্রি করে তাহলে সনাতন ধর্মের অনুগামীরা নিরব দর্শক হয়ে বসে থাকবে না। নাগা সন্ন্যাসীরা তাদের শাস্তি দেবেন। পুরী আরো বলেন, নিরাপত্তার দিক দিয়ে দেখলে মহা কুম্বে আগত তীর্থযাত্রীদের মেলায় প্রবেশের আগে চিহ্নিত করে ফেলা উচিত। আমরা স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই মেলা প্রাঙ্গনে যেন কোনো মুসলিম কোনো দোকান, বা ওরকম কিছু না খুলতে পারে।
তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নয়, তবে বিগত দিনের পরিস্থিতির একাধিক ঘটনা পর্যালোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে খাবারে থুতু, প্রস্রাব মিশ্রণ করে বিক্রির অভিযোগ এসেছে। সেই জন্যেই এই সিদ্ধান্ত। আর মারাত্মক ভিড় থাকা এই মেলায় যদি এই ঘটনা ঘটে তাহলে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানবে। নাগা সন্ন্যাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে যাবেন। কারণ ধর্ম ও ঐতিহ্যের হস্তক্ষেপ তারা কখনোই মেনে নেবেন না। তাই পরিস্থিতি বিচার করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আখরার তরফে।
তিনি আরো বলেছেন, মুসলমানদের পবিত্র স্থানে কি হিন্দুরা যায়? যদি না যায় তাহলে ওরা কেন মহাকুম্ভে ব্যবসা করতে আসবেন? ওরা যদি সনাতন ধর্মে বিশ্বাস রাখেন পবিত্র গঙ্গা-মায়ের জলে ডুব দেয়। তাহলে কেউ আপত্তি করবে না।
বাঘেশ্বর ধামের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীও অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটা একদম উচিত দাবি। তিনি এর সাথে একমত। তাঁর কথায়, যাদের সনাতন সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে, হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে, হিন্দু দেব দেবী সম্পর্কে, হিন্দুদের পূজা পদ্ধতি এবং পুজোর সামগ্রীকে কিভাবে সম্মান করতে হয় জানেন তাদেরকেই দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া উচিত। সেটাই সঠিক হবে। যাদের এই কাজ সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই, হিন্দু পূজা পদ্ধতি না যেনে পূজা সামগ্রী বিক্রি করেন তারা তো ক্ষতি করবেননি। সেই কারণেই থুথু কান্ড, প্রস্রাব কান্ডের মতো ঘটনা ঘটেছে। আমরা মনে করি কোনো ষড়যন্ত্রকারী ইচ্ছাকৃত এই কাজগুলো করেন। ওই কারণে অহিন্দুদের মহাকুম্ভে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত। তাঁর পরিষ্কার প্রশ্ন “মেরে আঙ্গনে মে তুমাহারা কেয়া কাম হ্যায়?” তাঁর কথায় এখানে ত্রিবেণীতে সাধু সন্তরা যাবেন, পূন্য স্নান করবেন সে সম্পর্কে আপনাদের কিছুই জানা নেই। তাহলে সেখানে কেন আপনারা যাবেন? হিন্দুত্বের সঙ্গে যাদের কোনো সম্পর্ক নেই, সনাতনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, রামকে আপনারা মানেন না, তাহলে ভগবান রামের নামে যখন কাজ হচ্ছে সেখানে কেন তোমরা কাজ খুঁজতে যাচ্ছো?”