পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৮ মার্চ: কিশোরীদের বাড়ি নিয়ে গিয়ে লাগাতার ধর্ষনের মামলায় এক হোমের মালিককে দোষী সাব্যস্ত করলো বালুরঘাট জেলা আদালত। মঙ্গলবার হিলির তিওড়ে অবস্থিত ধীরেন মহন্ত চ্যারিটেবল সোসাইটির কর্ণধার দিলীপ মহন্ত সহ মোট তিন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
এদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা দ্বিতীয় কোর্টের (পক্সো স্পেশাল) বিচারক সুজাতা খারগে এই রায় ঘোষণা করেন। মূল অভিযুক্ত দিলীপ মহন্তকে ৩৭৬(২)(ডি)(আই) আইপিসি সহ ৬@১০পক্সো ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। একই সাথে হোমের প্রাক্তন সুপার সাবিত্রী হেমব্রম এবং সহায়িকা খুশি মন্ডলকেও ৩৭৬(২)(ডি)(আই) আইপিসি ও ১০৯ আইপিসি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বুধবার যাদের সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক। পর্যাপ্ত সাক্ষী প্রমাণের অভাবেই দিলীপ মহন্তের দুই ড্রাইভারকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করা হয়েছে এদিন বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী।
আদালত সুত্রের খবর, ২০১৫ সালের ৩রা আগষ্ট হিলির তিওরের ধীরেন মহন্ত চ্যারিটেবিল সোসাইটির কর্ণধার দিলীপ মহন্তের নামে গুরুতর অভিযোগ ওঠে। হোমের মেয়েদের ব্যবহার করে দীর্ঘদিন করে ব্যবসা চালচ্ছিলেন বলে অভিযোগ দায়ের হয় হিলি থানায়। তাদের সাথে নিয়মিত যৌন হেনস্থা করা হত বলেও অভিযোগ ওঠে দিলীপ মহন্তের বিরুদ্ধে। ঘটনায় হোমের ৫ কিশোরীকে ছাড়াও ওই হোমের সুপার ভক্তি সরকার লাহা এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হিলি থানায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মূল অভিযুক্ত দিলীপ মহন্ত ছাড়াও তার দুই গাড়ি চালক ও হোমের এক প্রাক্তন সুপার খুশি মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে। যেখানে পুলিশি রিমাইন্ডারের সময় আবেদনের ভিত্তিতে দিলীপ মহন্তের বাড়ি থেকে বিদেশী একধিক নামিদামি মদের বোতল সহ ৪৫ রকম জিনিস বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। এছাড়াও তার ব্যবহারের কম্পিউটার, সিসিটিভি সহ একধিক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়। যার মাধ্যমে একাধিক সুত্র সামনে আসে পুলিশের কাছে। তারপর থেকেই পুলিশ কাস্টাডিতেই ছিলেন অভিযুক্তরা। করোনার কারণে বিচার প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হলেও এদিন তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক।
বালুরঘাট জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী প্রতুল মৈত্র জানিয়েছেন, ৫৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। দিলীপ মহন্ত, সাবিত্রী হেমব্রম এবং খুশি মন্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। বাকি দুই ড্রাইভারকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে । বুধবার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।