দিঘীর জমি দখল ইস্যুতে তপনে ধিক্কার মিছিল বিজেপির, মিথ্যেভাবে তাঁর নাম জড়ানো হচ্ছে বললেন মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা

পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ২০ জুলাই: রাতারাতি ১০ তৃণমূল নেতার নামে দীঘির পার্শ্ববর্তী এলাকা রেকর্ড হবার ঘটনায় তপনে ধিক্কার মিছিল বিজেপির। সরকারি সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন করে তৃণমূল নেতাদের নামে রেজিস্ট্রি হওয়ার ঘটনার অভিযোগের তদন্ত চেয়ে বিএলআরও’কে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে সংগঠনের তরফে। সোমবার জেলা পরিষদের ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর মণ্ডল কমিটির ডাকে ওই মিছিলে হাঁটেন প্রচুর বিজেপি কর্মী সমর্থক।

জেলা বিজেপি সভাপতি বিনয় বর্মনের নেতৃত্বে মিছিল অনুষ্ঠিত হয় তপনে। সংগঠনের অভিযোগ, শুধু তপন দিঘির পার্শ্ববর্তী এলাকায় নয়, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যেখানে আবেদন করে দিনের পর দিন রেকর্ড পাচ্ছেন না সেখানে টাকার বিনিময়ে রাতারাতি তৃণমূল মাফিয়ারা নিজেদের নামে জমি লিখে নিচ্ছেন। এমন সব ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বিএলআরও’কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় মিথ্যে ও উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে তাঁর নাম জড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তপনের বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা।

উল্লেখ্য সম্প্রতি বালুরঘাটে অনলাইনে এক সাংবাদিক বৈঠক করে তপন দিঘীর পার্শ্ববর্তী জমি হস্তান্তর হওয়ার ঘটনায় অনিয়মের অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। রাতারাতি সেই জমি ১০ তৃণমূল নেতার নামে সমপরিমানে রেকর্ড হল কিভাবে সেই প্রশ্নও তোলা হয়। তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ণ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা ও বিধায়ক গৌতম দাসের ঘনিষ্ঠরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এমন কাজ করেছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। যার পরেই ওই তালিকায় থাকা দশ জনের বিরুদ্ধেই অবৈধভাবে প্রাচীন তপন দিঘির জমি হস্তান্তরের অভিযোগ তুলে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।

যদিও তৃণমূলের দাবি কোন সরকারি সম্পত্তি নয়, রায়তি সম্পত্তি হিসাবেই ওই জমি এক মহিলার কাছ থেকে কিনেছিলেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠরা। কিন্তু যে মহিলার কাছে ওই জমি কিনেছিলেন বলে দাবি করেছিল তৃণমূল নেতারা, সেই মহিলার রেজিস্ট্রির দুমাস আগেই মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি তোলা হয়েছে বিজেপির তরফে। যার শংসাপত্র দেখিয়েই ‘লাগামহীন’ এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে তুমুল সরব হয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ। যে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো আলোড়ন তৈরি হয়েছে জেলাজুড়ে। এদিন সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই তপনে ধিক্কার মিছিল করেন বিজেপি নেতৃত্ব।

বিজেপির জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন জানিয়েছেন, অবৈধভাবে সরকারি সম্পত্তি নিজেদের নামে করে নিয়েছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠরা। এমন সব আরও একাধিক ঘটনার তদন্তের দাবিতে বিএলআরও’কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

তপন ব্লকের বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা জানিয়েছেন, জমি রেজিস্ট্রি বিষয়টি বিএলআরও ভালো বলতে পারবেন। সে বিষয়ে তাঁর কোনও মন্তব্য নেই। তবে ব্যক্তিগত সম্পত্তি কিনেছেন তৃণমূল কর্মীরা। সাংসদ মিথ্যা অভিযোগ তুলে প্রচার করতে চাইছেন এবং তাঁর নামেও মিথ্যা বদনাম দেবার চেষ্টা চলছে।

তপনের বিএল আরও মধুসূদন বনিক জানিয়েছেন, এমন অভিযোগ সঠিক নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *