চিন্ময় ভট্টাচার্য
আমাদের ভারত, ৯ ফেব্রুয়ারি:
অমিত শাহর সফরে বিজেপি কর্মীদের ‘গোলি মারো’ স্লোগানের পালটা, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ সপ্তাহ পালন করল বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন ‘ঐক্য বাংলা’। ১লা মার্চ শাহর সভায় ওঠা ‘গোলি মারো’ স্লোগানের পরই ‘ঐক্য বাংলা’ তাদের ফেসবুক পেজে ঘোষণা করেছিল, পরবর্তী একসপ্তাহ তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা প্রচার করবে। সেই মতো ৮ই মার্চ পর্যন্ত এই সংগঠন ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সপ্তাহ’ পালন করেছে। রবিবার বিকেলে কলকাতার ‘রাণু ছায়া’ মঞ্চে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় এই সপ্তাহ পালন।
‘ঐক্য বাংলা’র সদস্যরা নিজেদের ‘ঐক্যযোদ্ধা’ বলতে পছন্দ করেন। অন্যতম ‘ঐক্যযোদ্ধা অভিজ্ঞান সাহা জানিয়েছেন, তাঁরা সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন কলকাতা শহরের আনাচকানাচে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। এই দিনগুলোয় তাঁরা পথ-ঘাট, রাস্তা, চায়ের দোকান-সহ বিভিন্ন জায়গায় নানা বয়সের মানুষের কাছে পৌঁছেছেন। তাঁদের কাছে বাঙালি জাতির অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করেছেন। বাংলার অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের কথা- লালন ফকির, কবি নজরুল রবীন্দ্রনাথের বলে যাওয়া সম্প্রীতির কথা জানতে চেয়েছেন।
সমাপ্তি অনুষ্ঠানে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে ‘ঐক্য-যোদ্ধা’রা ছাড়াও সাধারণ নাগরিকরাও যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে ‘ঐক্য বাংলা’র সাধারণ সম্পাদিকা সুলগ্না দাশগুপ্ত বলেন, ‘বাঙালি লালনের রক্ত ধমনীতে বহন করে। যে লালন ফকির জাত-ধর্মের উর্ধ্বে, ধর্মীয় পরিচয়ের উর্ধ্বে উঠে বাঙালিকে সাধনা ও মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। এই সব কারণেই বাঙালি দাঙ্গা করে না। দেশে দাঙ্গার ৮৫ শতাংশ ঘটনার জন্য দায়ী গো বলয়ের রাজ্যগুলো। গত একসপ্তাহে আমরা যত বাঙালির সঙ্গে কথা বলেছি, একজনের থেকেও কোনও সাম্প্রদায়িক বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য শুনিনি।’ সেকথা মাথায় রেখে সুলগ্না দাশগুপ্ত আপামর বাঙালিকে বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য রক্ষা করতে ওই অনুষ্ঠানস্থল থেকেই আহ্বান জানিয়েছেন।