আমাদের ভারত, ২৫ জুন: অযোধ্যার রাম মন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি, সরঞ্জাম বা অন্য কোনো ত্রুটি নেই বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন নৃপেন্দ্র মিশ্র। অযোধ্যায় শ্রীরাম জন্মভূমির তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান মঙ্গলবার দিন বলেন, রাম মন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো আপোষ করা হয়নি। একই সঙ্গে মন্দিরের ভেতরে নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটিও খন্ডণ করেন তিনি।
চলতি বছরে ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন করেছিলেন অযোধ্যার রাম মন্দির। সেই সময়ে অভিযোগ উঠেছিল মন্দিরের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই লোকসভা ভোটে নজর কাড়তে উদ্বোধন করা হচ্ছে এই মন্দির। মন্দির উদ্বোধনের ৫ মাস পূর্তির পরই সোমবার প্রকাশ্যে আসে রাম মন্দিরের গর্ভগৃহের ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে। বর্ষার শুরুতেই রাম লালার গর্ভ গৃহের ছাদ থেকে বৃষ্টির জল পড়তে শুরু করেছে বলে জানান রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান পুরোহিত জানান, প্রথম বৃষ্টিতে রাম লালার মূর্তি স্থাপন করা গর্ভগৃহের ছাদ ফুটো হতে শুরু করেছে। বিষয়টিতে মনোযোগ দেওয়া উচিত এবং কি ঘাটতি রয়েছে তা খুঁজে বের করে মেরামত করা উচিত। মন্দিরের নিকাশী ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত বলেও সোমবার অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, মন্দির থেকে জল বার করার কোনো জায়গা নেই। বৃষ্টি আরো বাড়লে মন্দিরে পুজো করাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে মন্দিরের নির্মাণের অভিযোগ কার্যত এক ঝটকায় উড়িয়ে দিলেন নৃপেন্দ্র মিশ্র। তিনি জানান, মন্দিরের বিদ্যুতের লাইনগুলি বেয়ে জল ভেতরে চলে আসছে আর সেটাই চুইয়ে পড়ছে।
প্রাক্তন আইএএস অফিসার নৃপেন্দ্র মিশ্র জানিয়েছেন যে, তিনি নিজে পরিদর্শন করেছেন কোথাও কোনো সমস্যা নেই। পাশাপাশি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন কেন বৃষ্টিতে ছাদ থেকে মন্দির চত্বরে জল আসতে শুরু করেছিল। তিনি জানান, মন্দির চত্বরে কোনো জলের ছিদ্র নেই, কোনো সমস্যা নেই। এই তথ্যের ভিত্তি হল এটা তিনি নিজে পরিদর্শন করে দেখেছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, নির্মানাধীন প্যাভিলিয়নের ছাদ দ্বিতীয় তলায় শেষ হবে। দ্বিতীয় তলায় গুণ মন্ডপের ছাদ হলেই মন্দিরের ভিতরে বৃষ্টির জল প্রবেশ করা বন্ধ হবে।
ভক্তদের সুবিধার্থে গুন মণ্ডপের ছাদে অস্থায়ী নির্মাণ করে এই মুহূর্তে জল ও সূর্যের আলো প্রবেশের পথ বন্ধ করা হয়েছে। জল নিষ্কাশনের জন্য সব মন্ডপে ড্রেনেজ করা হয়েছে। তাঁর মতে, মন্দিরের মেঝে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জল বেরিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, নাগর স্টাইলে মন্দিরটি চারিদিক থেকে বন্ধ নেই। মন্দিরের মন্ডপের ডান ও বাম পাশের অংশগুলি খোলা। বিশেষ নির্মাণ শৈলীর কারণে প্রবল বৃষ্টি হলেও জল আসার কোনো সম্ভাবন নেই। তিনি বলেন, এইসব ভুল তথ্য ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। তার মতে ভূ- গর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার ঢোকানো বাকি আছে। তার জন্য পাইপ খোলা আছে। একই পাইপ দিয়ে জল প্রবেশ করেছে। এক্ষেত্রে নির্মাণে কোনো পদ্ধতির অভাব নেই। এই মুহূর্তে নির্মাণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ চলছে।
তিনি গর্ভগৃহে জল নিষ্কাশনের সমস্যা সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে বলেন, গর্ভগৃহে শুধু ভগবানকে স্নান ও সাজানোর জন্য প্রয়োজনীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে। ঋষি ও সাধুদের পরামর্শে ভগবানকে স্নান ও সাজানোর জন্য ব্যবহৃত জল একটি পুকুরে সংগ্রহ করা হয়। ভক্তদের চাহিদা অনুযায়ী স্নানের জল সরবরাহ করা হয়।