বনগাঁর পেট্রাপোল থেকে হেঁটেই বিহারের শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার চেষ্টা, রুখল পুলিশ

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, বনগাঁ, ১৬ এপ্রিল: লকডাউন উপেক্ষা করে হেঁটেই উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে বিহারের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন ৩৯ জনের একটি দল। আর সেই মত তাঁরা মুখে মাস্ক, প্রয়োজনীয় জিনিস বোঝাই ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে রেল পথ ধরে রওনা দেন৷ পাঁচ কিলোমিটার পথ হেঁটে তারা পৌছেছেন প্রথমে বনগাঁ শহরের রেল ষ্টেশন এলাকায়। সেখান থেকে ফের রেললাইন ধরে তারা শিয়ালদহের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার বিভূতিভূষণ হল্ট স্টেশনে আটকায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, এরা সকলেই শ্রমিক। বাড়ি বিহারের বিভিন্ন এলাকায়। তাঁরা সকলেই পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় সুসংহত চেকপোস্টে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে এসেছিলেন অনেক দিন আগেই। লকডাউনের জেরে তাঁদের কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারা সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছেন। শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, তাদের হাতে টাকা নেই। ঠিক মতো খাওয়া জুটছে না। সেই কারণেই তারা বিহারে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। পুলিশ তাদের বিভূতিভূষণ হল্ট স্টেশন থেকে উদ্ধার করে বুঝিয়ে ফের পেট্রাপোল বন্দরে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার সময় শারীরিক দূরত্ব মেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশের তরফে তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকেরা জানতেন না লকডাউন এখনও চলছে। তারা ভেবেছিলেন শিয়ালদহ থেকে বাড়ি ফেরার ট্রেন পাওয়া যাবে। তাই তারা এদিন হেঁটেই শিয়ালদহ পৌঁছতে চেয়েছিল।

পুলিশ সুপার জানান, ‘‘ওই শ্রমিকদের ফের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যতদিন লকডাউন চলবে তাদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’

আটকে পড়া কাজ হারানো ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের সেন্ট্রাল ওয়্যার হাউজ কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের তরফে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ ১৯৭০ সাল থেকে বিহারের শ্রমিকেরা এখানে পণ্য ওঠানো নামানোর কাজ করেন। অনেকই পেট্রাপোল-বনগাঁয় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। অনেক শ্রমিক পরিবার নিয়েও বসবাস করেন। সকলের এখন রোজগার বন্ধ। বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন,”বনগাঁয় থাকা ভিন রাজ্যের প্রায় ৩০০ শ্রমিককে আমরা পুরসভার তরফে চাল, ডাল, আলু, তেল দিয়ে সাহায্য করেছি। আগামীদিনেও করব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *