আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ৫ নভেম্বর: টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছাত্রীর মুখ বেঁধে গণধর্ষণের চেষ্টা। বুদ্ধির জোরে নিজেকে রক্ষা করল বীরভূমের নাবালিকা। গণধর্ষণে বাধা পেয়ে দুষ্কৃতিরা নাবালিকাকে মারধর করে তার পোশাক ছিঁড়ে দেয়। গ্রেফতার করা হয়েছে দুই অভিযুক্তকে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের দুবরাজপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধে ৬টা নাগাদ টিউশন সেরে বাড়ি ফিরছিল নাবালিকা ছাত্রী। বান্ধবীর সঙ্গে সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিল সে। মাঝপথে বান্ধবীকে ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। অভিযোগ, সেই সময় তার পথ আটকায় স্থানীয় দুই যুবক। আচমকা পথ আটকাতেই হতচকিত হয়ে যায় বছর ১৭- র স্কুল পড়ুয়া। ততক্ষণে মুখে কাপড় গুঁজে টানাটানি শুরু হয়ে যায়। তাকে জোর করে দুবরাজপুর – পন্ডিতপুর রাস্তা থেকে টেনে হিঁচড়ে পাশের মাটির রাস্তায় নিয়ে যায়। ঝোঁপ জঙ্গলে ঘেরা ফাঁকা অন্ধকার রাস্তায় টেনে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন শুরু হয়। যাতে নির্যাতিতা চিৎকার করতে না পারে সেই জন্য মুখে কাপড় বেঁধে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তার পরেই তাকে দু’জন মিলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ওই অঞ্চলে সন্ধে থেকেই কালী পুজো উপলক্ষ্যে বিচিত্রানুষ্ঠান চলছিল। তাই মাইক ও বক্স বাজছিলো খুবই জোড়ে। সেই সুযোগকে কাজে লাগায় দুই দুষ্কৃতী। কিন্তু একটা গান শেষ হতেই আওয়াজ বন্ধ হয়। ঠিক সেই সময় ওই নাবালিকা কোনওক্রমে মুখের বাঁধন খুলে ফেলে চিৎকার করতে শুরু করে। নাবালিকা বাধা দিলে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় নাবালিকার পোশাকের একাংশ। এদিকে চিৎকার শুনেই স্থানীয়েরা ছুটে আসে। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে জমায়েত লোকজনের ফাঁক গলে পালিয়ে যায় পিন্টু সাহা ও চাঁদ দে নামে দুই অভিযুক্ত।
নাবালিকার অভিযোগ, টিউশন পড়ে বাড়ি ফেরার পথে পণ্ডিতপুর গ্রামের কাছে ওই দুই যুবক তার পথ আটকায়। তাকে জোর করে রাস্তা থেকে টেনে নিয়ে যায় পাশে একটি ঝোপের মধ্যে। সেখানে কাপড় দিয়ে তার মুখ বাঁধা হয় এবং গণধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।
দুবরাজপুর থানায় অভিযুক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতার পরিবার। ঘটনার পর থেকেই পলাতক দুই অভিযুক্তকে পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন নির্যাতিতার পরিবারের লোকেরা। তবে এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে নাবালিকা যেভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে, তাতে তার সাহস ও উপস্থিত বুদ্ধির প্রশংসা করছেন সকলে। যদিও মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত মা-বাবা।