আমাদের ভারত, কোলাঘাট, ১০ জানুয়ারি: বড়সড় এটিএম জালিয়াতি চক্র ফাঁস করল কোলাঘাট থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী।
তমলুক অ্যাক্সিস ব্যাংকের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন গ্রাহকের টাকা এটিএম থেকে কয়েক মিনিটের মধ্যে টাকা তুলে নিত ব্যাঙ্ক প্রতারণা চক্রটি। গ্রামের বিভিন্ন মানুষকে ফোন করে বলতেন আপনার এটিএম কার্ডের ভ্যালিডিটি শেষ হয়ে গিয়েছে। গ্রাহকরা কিছু বুঝে উঠার আগেই কার্ডের গোপন পিন নাম্বার সহ বিভিন্ন তথ্য ফাঁস করে দেন। আর এটিএম জালিয়াতি চক্র কয়েক মিনিটের মধ্যে টাকা আত্মসাৎ করে নেয় l এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনার শিকার হন হোসিয়ারি কারিগর আশীষ ধারা, সত্যেশ্বর মান্না সহ অ্যাক্সিস ব্যাংকের বেশ কিছু গ্রাহক।
আশীষবাবু জানান, পেশাগত কারণে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তমলুকে অ্যাক্সিস ব্যাংকের শাখায় একাউন্ট খোলেন। এরপর ওই অ্যাক্সিস ব্যাংকের কর্মচারী বলে বিশ্বাস অর্জন করেন দক্ষিণ দমদমের যুবক অভিষেক মজুমদার। এরপর আশিষবাবুকে বলেন আপনার এটিএম আপনি ব্যবহার করেননি এর জন্য প্রায় ১৫০০ টাকা ফাইন করা হতে পারে। আপনি তাড়াতাড়ি এটিএমটা বন্ধ করুন। এরপরই আশিষবাবু এটিএম কার্ড বন্ধ করার জন্য অভিষেক মজুমদারকে এটিএম সহ সমস্ত তথ্য তুলে দেন। এরপরই আশিষবাবু দেখেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৮৬ হাজার ৭৫৭টাকা তুলে নেন। এরপর যোগাযোগ করলেও কোনো সদুত্তর পাননি আশিষবাবু।
একই অভিজ্ঞতা হয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাকটিয়ার বাসিন্দা সত্যেশ্বর মান্নার। সত্যেশ্বরবাবুও বিশ্বাস করেছিলেন অভিষেক মজুমদার অ্যাক্সিস ব্যাংকের তমলুক শাখার একজন কর্মচারী। অভিষেক সত্যেশ্বরবাবুর কাছে বারবার বলেন আপনার এটিএম ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেননি, এটিএম কার্ডটি বন্ধ করে দিন। সত্যেশ্বরবাবু তখনও জানতে পারেননি তিনি প্রতারণা চক্রের শিকার হতে চলেছেন। এরপর যথারীতি অভিষেক মজুমদার সত্যেশ্বরবাবুর কাছ থেকে এটিএম কার্ড নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ। এরপর সত্যেশ্বরবাবু জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে। সাথে সাথে তমলুক ব্রাঞ্চে গিয়ে দেখেন তার অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ্য ৭৩ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। এরপর ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করলে থানায় ডাইরি করতে বলে।
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দমদম থেকে ওলা ক্যাব বুক করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভোগপুর গ্রামে একটি এটিএম কার্ড বন্ধ করতে আসে অভিষেক মজুমদার। গ্রামবাসীরা জালিয়াতি সন্দেহ করে অভিষেকে বসিয়ে তমলুক ব্রাঞ্চ অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পারেন অভিষেক মজুমদার এক প্রতারকl গ্রামবাসীরা কোলাঘাট থানায় অভিষেকে তুলে দেন।