আমাদের ভারত, ১২ নভেম্বর: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই বুধবার রাজ্যের বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বিধানসভায় বিশেষ বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপির অন্যান্য নেতৃত্ব। বৈঠকে সব বিধায়ককে অল আউট ঝাঁপানোর বার্তা দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এদিন বলেছেন, প্রথমবার বিধায়ক হওয়া তুলনামূলক ভাবে সহজ কাজ, কিন্তু দ্বিতীয়বার জিতে ফিরে আসা কঠিন। বিধায়কদের সেই কঠিন দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, তিনি বলেছেন হাতে চার মাস সময় আছে। এখন থেকে নিজেদের বিধানসভায় লেগে থাকতে হবে, তবেই সাফল্য আসবে। সেই সূত্রে তিনি বাড়ি বাড়ি জনসংযোগের উপর জোর দিয়েছেন।
বৈঠকে শুরুতে কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়কে উদ্দেশ্য করে সুকান্ত বলেন, সবাইকে অভিনন্দন বিশেষ করে সৌমেন রায়’কে, কারণ উনি একবার গিয়েও আবার ফিরে এসেছেন।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে সুকান্ত মজুমদারের এই মন্তব্যে রাজনৈতিক বার্তা ছিল গভীর, যা নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। বিধায়কদের উদ্দেশ্যে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আপনাদের মধ্যে অনেকেই নানা প্রলোভন, চাপ ও হুমকির মুখে থেকেও দল ছাড়েননি, আপনারা দলের প্রকৃত সৈনিক। আপনাদের সাহসের জন্যই সংগঠন টিকে আছে।
২০২১ সালের ভোটে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয় সৌমেন রায়। কিছুদিন পরেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, পরে ফের ফিরে আসেন পদ্ম শিবিরে। সেই প্রসঙ্গ টেনে সুকান্তবাবুর এই প্রশংসাসূচক রাজনৈতিক বার্তা যে স্পষ্ট তা বলার অপেক্ষা রাখেনি।
একুশের ভোটে ৭৭টি আসন পাওয়ার পরে বর্তমানে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৬৫। ভোট পরবর্তী সময় একাধিক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে আসন্ন ২৬- এর ভোটের আগে সেই পরিস্থিতি আগে থেকেই মোকাবিলা করতে চাইছে বিজেপি, তাই দলের নেতারা এখন থেকে সংগঠন গুছিয়ে নিচ্ছেন।
সৌমেন রায়ের উদাহরণ টেনে সুকান্ত মজুমদার মূলত বার্তা দিতে চাইলেন, দল ছেড়ে যাওয়া মানে ভুল, ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
আজকের আলোচনায় এসআইআর এর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। সেখানে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, দ্রুত কাজে হচ্ছে, গতি রয়েছে, যা হবে ভালোই হবে। বিশেষ করে মতুয়া বিধায়কদের সামনে তাঁর আশ্বাস, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার নিয়মের সরলীকরণ করেছে। আগামী দিনে আরো সরলীকরণ করবে, ফলে মতুয়াদের কোনো ভয় নেই। তারা নির্দ্বিধায় সিএএ- এর জন্য আবেদন করুন। একজন হিন্দু শরণার্থীর নামও বাদ যাবে না।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী বিধায়কদের মানসিকভাবে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এবং আগামী নির্বাচনের আগে দলের ভিত শক্ত করত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পদক্ষেপের কথা মাথায় রাখতে বলেছেন।

