AI, Math, পড়াই উইথ এ আই! অঙ্কের ভয় কাটাতে সাহায্য করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টিউটর, রাজস্থানের সরকারি নয়া উদ্যোগ আইএএস আধিকারিকের

আমাদের ভারত, ১৭ জুলাই: অনেক ছাত্র ছাত্রীর কাছে অঙ্ক ভয়ের বিষয়। অঙ্ক পরীক্ষার নাম শুনলেই গলা শুকিয়ে কাঠ। কিন্তু এবার সেই সমস্যার সমাধানেও নেমে পড়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। রাজস্থানের টঙ্ক জেলার দশম শ্রেণির ছাত্র অমান গুজার জানিয়েছে, হাজার চেষ্টা করেও সে আগে কিছুতেই ৫৫-র ওপরে অঙ্কে নম্বর পায়নি। সেখানে এই বছর সে পেয়েছে ৬৫। আর এই বদলের পেছনে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। টঙ্ক জেলার জেলাশাসক আইএএস অফিসার সৌম্য ঝাঁ’র উদ্যোগে “পড়াই উইথ এআই” এর জন্য এই উন্নতি সম্ভব হয়েছে।

“পড়াই উইথ এআই” নামের একটি অভিনব শিক্ষা প্রকল্প ৩৫০টির বেশি সরকারি স্কুলে চালু হয়েছে এআই চালিত শিক্ষা ব্যবস্থা। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অঙ্কের মতো দুর্বোধ্য বিষয়টিকে সহজ ও আনন্দদায়ক করে তোলাই এর মূল লক্ষ্য। জেলাশাসক সৌম্য লক্ষ্য করেন টঙ্কের স্কুলগুলিতে বহু পড়ুয়ার মধ্যে অঙ্ক ভয় ও আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল। অনেকেই বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চাইলেও অঙ্ক না পারার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছিল। জেলাশাসক সৌম্য জানান, আমি লক্ষ্য করেছিলাম পড়ুয়ারা স্বপ্ন দেখছে এ আই, রোবোটিক্স বা ড্রোন নিয়ে কাজ করার, অথচ অঙ্কের ভয়ের কারণে কেউ সায়েন্স স্ট্রিম নিচ্ছে না। সেখান থেকেই ভাবনা আসে যদি এআই দিয়েই এআই-কে শেখানো যায়।

ডিজিটাল টিউটর হিন্দী, ইংরেজিতে প্রশ্ন বুঝিয়ে দেয় ধাপে ধাপে। কোনো সমস্যা বুঝতে না পারলে নতুন করে ব্যাখ্যা দেয়। এআই শিক্ষকদের সাহায্য করে যেমন নিজে থেকেই তৈরি করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অনুশীলনের সেট। এমনকি ছাত্র অনুযায়ী কাস্টমাইজ প্রশ্ন।

২০২৫ সালের দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার টঙ্ক জেলায় পাশের হার ৯৬.৪ শতাংশ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি। প্রথম বিভাগে উত্তরণের হারও বেড়েছে ২৩% থেকে ২৮.২৩ শতাংশ। মাত্র ৬ সপ্তাহে চালু হওয়া পড়াই উইথ এআই প্রকল্প টঙ্কের শিক্ষার যুগান্তকারী পরিবর্তনে এনেছে।

সৌম্য ২০১৭-এর ব্যাচে আইএএস অফিসার। ইউ পি এস সি প্রস্তুতির সময় নিজের পড়াশোনায় এআইএর সাহায্য নিয়েছিলেন। পরে জেলা শাসক হওয়ার পর প্রশাসনিক কাজ শিখতেও এআই- এর উপর নির্ভর করেন মাঝে মাঝে। তাঁর কথায়, যাদের কাছে ভালো টিউটোরিয়াল নেই, তাদের কি এআই শিক্ষক হতে পারে? সেটা ভাবতে ভাবতেই প্রকল্পটা শুরু করি। এখন সেটা শুধু অঙ্কে নয়, আস্তে আস্তে ইংরেজি ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে চালু করার কথা ভাবছি।

পড়াই উইথ এআই পড়ুয়াদের যে যে সুবিধা গুলো দিচ্ছে…. হিন্দি ও ইংরেজিতে প্রশ্ন বোঝায়, ছাত্র অনুযায়ী প্রশ্ন কতটা কঠিন হবে তা নির্ধারণ করে, ছাত্রদের অগ্রগতির উপর ভিত্তি করে সাজায় পরবর্তী অনুশীলন, সাপ্তাহিক টেস্ট রিভিশন ও বিশ্লেষণ রিপোর্ট, শিক্ষকদের জন্য টুলস সহ তৈরি মডেল টেস্ট প্রশ্ন পত্র তৈরি করে।

এআই শিক্ষা ব্যবস্থাকে কেবল ডিজিটাল করেনি, পড়ুয়াদের মধ্যে নতুন করে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলেছে। এই প্রকল্পের কারণে যে বিষয় একসময় ছিল ভয়ের কারণ, সেটাই এখন অনেকের কাছে হয়ে উঠেছে প্রিয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *