আমাদের ভারত, ২৯ ফেব্রুয়ারি: ৫৫ দিনের টালবাহানের অবসান। মিনাখাঁ থেকে গ্রেপ্তার সন্দেশখালিr নিখোঁজ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। তাকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে, আদালত তাকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১৪৮, ১৪৭ সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, বিজেপি এবং সন্দেশখালির মায়েদের আন্দোলনের ফলে শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হলো।
শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হলো সন্দেশখালি তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। ৫ জানুয়ারি থেকে বাংলার রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিলেন শেখ শাহজাহান। তার ঘনিষ্ঠ বহু নেতাকে গ্রেপ্তার করলেও সন্দেশখালির বাঘ হিসেবে পরিচিত শাজাহানকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। আর তা নিয়ে একাধিক যুক্তি খাড়া করেছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই মধ্যে আদালত নিজের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল পুলিশ শাহজাহানকে ধরতে পারে, এই ব্যাপারে কোনও স্থগিতাদেশ নেই। এই পরিস্থিতিতে খানিকটা চাপে পড়ে যায় রাজ্য প্রশাসন। অবশেষে ৫৫ দিন পর শাহজাহানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করল।
রিপোর্ট অনুযায়ী তৃণমূল নেতাকে মিনাখাঁ থেকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সকালে শাহজাহানকে বসিরহাট আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতে তোলার আগে আদাল লকআপে রাখা হয়েছিল তৃণমূলের অভিযুক্ত এই নেতাকে। জানা গেছে ১৪ দিনের হেফাজতে চাওয়া হলেও আদালত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, সেখ শাজাহান সাজান গ্রেফতার হয়েছে বিজেপির আন্দোলন এবং সন্দেশখালির মা, বোনদের লাগাতার আন্দোলনের ফলে। প্রথম থেকেই মমতা ব্যানার্জি এবং তার সরকার বলছিল এরকম কিছু ঘটেছে বলে জানা নেই। কিন্তু আমি বলেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারকে বাধ্য করব, কারণ যে মহিলাদের উপর অত্যাচার করছে করেছে অবশ্যই তাকে গ্রেফতার করতে হবে।
প্রসঙ্গত ২৫ তারিখ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, শাজাহানকে ধরার ক্ষেত্রে রাজ্যের হাত বেঁধে রেখেছে বিচার ব্যবস্থা। আর একদিন পরেই ২৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের তরফে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই দাবি কার্যত খারিজ করে দেওয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারিতে কোনও বাধা নেই। একইসঙ্গে সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে যুক্ত করার নির্দেশও দিয়েছিলেন উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি।
বিগত ৫ জানুয়ারি থেকে শাহজাহানের খোঁজ চলছিল তবে এতদিনে তিনি অধরা ছিলেন। এরই মাঝে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এই আবহে রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল সন্দেশখালি। গত ৫ জানুয়ারির রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি আধিকারিকরা। সেখানে তারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপরেই শাহজাহান ও তার ঘনিষ্ঠ শিবু, উত্তম’দের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়। সন্দেশখালিতে সন্ত্রাসের রাজত্ব চালানোর অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধর, হুমকি, অত্যাচার, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মত ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল শাহজাহান বাহিনী। পরে উত্তম শিবুকে গ্রেফতার করা হয়, অজিত মাইতিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এতদিন শাজাহান পলাতক ছিল।

