রাজেন রায়, কলকাতা, ১২ মে: করোনা মহামারীতে ডিজিটাল রেশন কার্ডেই ৫ কেজি করে চাল-গম পাচ্ছেন মানুষ। কিন্তু যারা পুরনো রেশন কার্ড পরিবর্তন করে উঠতে পারেননি, তাদের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে। কিন্তু এর ফলে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন রাজ্যের এক শ্রেণির মানুষ। তাই এবার ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকলেও পুরনো কার্ডেই বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
গত শনিবার একটি খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই এই বিষয়টি নিয়ে হুলুস্থলু পড়ে যায়। জানা যায়, খোদ তৃণমূল সাংসদ দেবের জ্যাঠতুতো দাদার পরিবারই ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকার ফলে রোজগারের অভাবে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকদিন আগে আবেদন করলেও স্থানীয় সমস্যার কারণে ডিজিটাল রেশন কার্ড পাননি। তাই তাঁরা রেশনের চালও পাননি। এমনকি ত্রাণের সামগ্রীনা দিয়েই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আর লকডাউনে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনাহারে থাকতে হচ্ছে পরিবারটিকে। এমনকি ত্রাণের সামগ্রীনা দিয়েই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতেন না তৃণমূল সাংসদ দেবও।
লকডাউন শুরুর পর থেকেই বিপদে পড়েন ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই এমন বহু গরিব মানুষ। তাদের দাবি, এমনিতেই খাটতে খাটতে কখন দিন কেটে যায় টের পাই না। তার ওপরে ডিজিটাল রেশন কার্ড করার সময় হয়নি। অনেকের অভিযোগ, আবেদন করেও ডিজিটাল রেশন কার্ড পাননি অনেকে। ঠিক যেমন হয়েছে দেবের জ্যাঠার পরিবারের ক্ষেত্রেও।
রাজ্যের সমস্ত মানুষ যাতে খাদ্যসাথী প্রকল্পে চাল-গম পান এবং সকলের তথ্য যাতে খাদ্য দফতরের কাছে সুরক্ষিত থাকে, তার জন্য ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু করেছিল রাজ্য। কিন্তু লোকবল ও সময়ের অভাবে সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে ওঠেনি। তার মধ্যে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এবার নড়েচড়ে বসল সরকার। সোমবার খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘যাদের পুরনো রেশন কার্ড রয়েছে, কিন্তু ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই তারাও এ বার থেকে বিনামূল্যে রেশন পাবেন। আমরা সমস্ত রেশন ডিলারকে মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছি। দু’একদিনের মধ্যেই সরকারি
নির্দেশিকাও জারি হবে। তার পর থেকে তারাও মাথাপিছু ৫ কিলোগ্রাম করে চাল-গম পাবেন।’ তিনি জানান, ‘৮ কোটি ৮ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৪৫ জনের অর্থাৎ ৮১.৩৪ শতাংশ মানুষের কাছে ইতিমধ্যেই ইতিমধ্যেই রেশন পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে। বাকিরা যাতে তা সহজে পান, তা অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে।’