আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২১ অক্টোবর: এবার জেলা সভাপতির পদ ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নুরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়েই পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। বিরোধীদের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত জেলা তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে আক্ষেপে ওই কথা বলেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি।
সোমবার সিউড়ির দুটি ব্লকে বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। একটি সাঁইথিয়া বিধানসভার সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের পুরন্দরপুর বান্ধব সমিতি ক্লাব মাঠে। অন্যটি সিউড়ি ১ নম্বর ব্লক এবং শহরের বেণীমাধব গ্রাউন্ডে। সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের সম্মেলনের আহ্বায়ক বর্তমানে কাজল শেখ গোষ্ঠীর নুরুল ইসলাম। দুটি সভাই বিকেল ৩টের সময় শুরু হয়। সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের সভায় অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিত থাকার কথা ছিল না। কিন্তু বোলপুর থেকে সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকের অনুষ্ঠানে যাওয়ার রাস্তায় নুরুলের সভায় আচমকা উপস্থিত হয়ে যান অনুব্রত। প্রথমেই তিনি বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। শুরুতেই অনুব্রত মন্ডল বলেন, “নুরুল আজকের বন্ধু নয়, পুরনো দিনের বন্ধু। সেই যুব কংগ্রেসের সময় থেকে লড়াই করে এসেছি। তাই নুরুলকে ডেকে বললাম তোমার সংগঠন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। লোকসভায় অনেক ভোটে লিড দিয়েছ। তার জন্য ধন্যবাদ। আমি যখনই জনসভা শুরু করি সিউড়ি ২ নম্বর ব্লক থেকে শুরু করি। আগামী দিনে যে জনসভা হবে সেই জনসভা এখান থেকেই শুরু করব। এখান থেকে অনেক লড়াই করে সাফল্য পেয়েছি। নুরুল সর্বদা আমার সঙ্গে সহযোগিতা করেছে”।
এরপরেই অনুব্রত মন্ডল বলেন, “মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলছিলেন নুরুল নাকি বলেছে সভাপতির পদ ছেড়ে দেবে। আমি নুরুলকে অনুরোধ করব, ‘আর একবার দিদিকে মুখ্যমন্ত্রী করে দাও। তারপর পদ ছাড়লে এক সঙ্গে ছাড়ব। দুই দাদা ভাইয়ে ছাড়ব, দুই বন্ধু মিলে ছাড়ব। এক সঙ্গে ছাড়ব। এখন ছাড়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।“
এদিকে মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই পুরন্দরপুরের মঞ্চে হাজির হন কাজল শেখ। তিনি বলেন, “কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী বিজয়া সম্মেলনী ভাগ করে দিয়েছেন। সেই মতো আমরা বিভিন্ন জন ভাগ করে যাচ্ছি। এখানে আমার আগে অনুব্রত মণ্ডল এসেছিলেন বলে শুনলাম। ভালো কথা। তবে উনার সঙ্গে এক মঞ্চে কবে থাকব সেটা বলতে পারছি না। মনে রাখবেন বীরভূম জেলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দেখেছেন। আর আমরা সব মমতার সৈনিক”।
বিজেপির জেলা সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, “অন্তর্দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে উন্নি সম্ভবত পুরনো জায়গা ফিরে পাননি। তাই ক্ষোভে অভিমাণে এমন কথা বলতে পারেন। তবে ২৬ অনেক দূর। আগে ২৪-২৫ পার করুন”।