আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২০ অক্টোবর: ফের সাবধানী অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। কাজলের সভায় না যাওয়ায় কেরিম গোষ্ঠীর লোকজনদের মারধর প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন তিনি। উল্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কোর কমিটির ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল তাঁর গলায়।
গরু পাচার মামলায় তিহার জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর জেলাজুড়ে বিজয়া সম্মেলনী শুরু করেছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ১৭ অক্টোবর থেকে মুরারই, নলহাটি, ময়ূরেশ্বর এবং রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লক নিয়ে সাতটি সভা করলেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু কোনো সভাতেই দেখা মেলেনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি, কোর কমিটির সদস্য ফাইজুল হক ওরফে কাজল শেখের। যদিও সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রতিটি সভাতেই অনুব্রত বলেন, “পরের সভাগুলিতে থাকবে”।
অবশ্য কাজল সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন অনুব্রতর সভায় তাঁর পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। তার প্রমাণ রবিবার বিকেলে রামপুরহাটে সরকারি একটি সভায় কাজল উপস্থিত হলেও যাননি অনুব্রতর তারাপীঠ কিংবা মহম্মদবাজারের সভায়।
উল্লেখ্য, শনিবার অনুব্রত মণ্ডলের যখন সভা চলছিল ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের মল্লারপুরে, ঠিক সেই সময় নানুরে সভা করেন কাজল শেখ। কাজলের সভায় সপরিবারে না যাওয়ার অপরাধে পালুন্দি গ্রামে অনুব্রত গোষ্ঠীর কেরিম শেখের সমর্থক বলে পরিচিত একটি পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ ওঠে কাজল ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রের। তারা বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। যদিও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি।
কাজলের বিরুদ্ধে একের পর এক এমন অভিযোগ উঠে এলেও সংযত অনুব্রত। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রত বলেন, “মারধরের খবর আমার কানে পৌঁছয়নি। আপনারা শুনতে পারেন। আমার বক্তব্য সবাইকে এক সঙ্গে চলতে হবে”। এরপরেই অনুব্রত মণ্ডল মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “গত লোকসভা নির্বাচনে ১১টি বিধানসভাতেই আমরা এগিয়ে ছিলাম। এরজন্য কোর কমিটির সদস্য যারা নির্বাচন করিয়েছিলেন তাঁদের ধন্যবাদ জানাবো। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ১১টি বিধানসভা আমারা দখল করব। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকলেই আমরা তৃণমূলের আরও শ্রীবৃদ্ধি করতে পারব”।
রবিবার তারাপীঠের সভায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ।