Anubrata, Rampurhat, হিংসা ভুলে সবাইকে নিয়ে চলার বার্তা অনুব্রতর

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১৭ অক্টোবর: আমি নেতা নয়, আপনাদের মতো একজন কর্মী। আমরা কেউ নেতা সাজবো না। আমাদের সবাইকে নিয়ে একসাথে চলতে হবে। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মী হয়ে মানুষের পাশে থাকবো। বৃহস্পতিবার বীরভূমের মুরারইয়ের দুটি ব্লকের বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠান থেকে এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।

দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি দশা থেকে মুক্তি পেয়ে প্রথম প্রকাশ্য জনসভায় উপস্থিত হলেন গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত তিহার জেল থেকে জামিনে মুক্ত অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। নিজের গড়ে ফিরে বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠান করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন তিনি। সেই মতো এদিন মুরারই ১ নম্বর ব্লকের পশুহাট এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠান সারলেন অনুব্রত মণ্ডল। বিকেলে মুরারই ২ নম্বর ব্লকের হিয়াতনগরে দ্বিতীয় সভা করেন।

প্রথম সভা থেকে এদিন দেখা গেল অন্য অনুব্রত মণ্ডলকে। চরাম চরাম ঢাক, নকুল দানা, গুড় বাতাসা, পাঁচনের দাওয়া দেওয়ার কথা শোনা গেল না অনুব্রতর গলায়। হুঁঙ্কারের বদলে দলীয় কর্মীদের অশান্তি না করার বার্তা দিলেন তিনি। তাঁর অবর্তমানে নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে নিচুতলার কর্মীদের প্রশংসা করলেন বারংবার। 

২ বছর পর প্রথম সভায় বহু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল অনুব্রত মণ্ডলের শারিরীক ভঙ্গি ও বক্তব্যে থেকে। 
কর্মীদের শান্তির বার্তার পাশাপাশি নিজেও সকলকে নিয়ে চলার শপথ নিলেন। বললেন, “সকলে মিলে দল করলে দল আরও বৃদ্ধি পাবে। উন্নয়ন বেশি হবে, মানুষের ভালো করতে হবে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও জয়ধ্বনি দিতে শোনা গেল অনুব্রতকে। তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভালো বক্তা। তাঁর বক্তব্য শুনবেন। খুব সুন্দর করে বক্তব্য রাখেন অভিষেক”।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের নামও মুখে আনেন দুটি মঞ্চে। বলেন, “কাজল শেখ, সাংসদ শতাব্দী রায়, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ফোন করে অনুষ্ঠানে আসার কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম সকলে মিলে একসঙ্গে বিজয়া সম্মেলনী করবো কর্মীদের সঙ্গে। কোনো কারণে তাঁরা আসতে পারেননি। পরের অনুষ্ঠান গুলিতে নিশ্চই উপস্থিত থাকবেন”। তবে একদা অনুব্রত মণ্ডলের ডান হাত বলে পরিচিত লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ওরফে রানাকে দুটি অনুষ্ঠানেই দেখা যায়নি। অবশ্য অনুব্রত মুখে তাঁর নামও নেননি।

তবে এদিন মুরারই ১ নম্বর ব্লকের সভাস্থলে অনুব্রত মণ্ডল পৌঁছতেই সভায় উপস্থিত কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলে কিল, চর ঘুষি। অনুব্রত মণ্ডল সভাস্থল ছেড়ে যেতেই ফের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বাঁশ নিয়ে মারপিট শুরু হয়। ঘটনায় উভয় গোষ্ঠীর তিন জন রক্তাক্ত হয়। তাদের মুরারই গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি অনুব্রত। মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একটি কথায় বলেন, “সবাইকে নিয়ে চলার আনন্দই আলাদা। আমি সবাইকে নিয়ে চলব”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *