আমাদের ভারত, ১৯ নভেম্বর: সাত বছর আগেই
তাৎক্ষণিক তিন তালাক অসাংবিধানিক ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু তিন তালাকের আরেক রীতি তালাক এ হাসান নিয়ে প্রবল আপত্তি জানালো দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, আধুনিক সমাজে কী করে চলছে এসব?
ইসলামে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম তালাক এ বিদ্দত বা তাৎক্ষণিক তিন তালাক। এই পদ্ধতিতে পরপর তিনবার তালাক বললেই বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে এই তিন তালাকের বেলাগাম অপব্যবহারের জেরে মামলা দায়ের হয়েছিল আদালতে।২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয়, এই রীতি সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক। ২০১৯ সালে সংসদে পাস হয় এই সংক্রান্ত আইন। যার মাধ্যমে এই রীতিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং অপরাধীকে তিন বছর সাজার বিধান দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এটা ছাড়া আরও একটি রীতি রয়েছে, যার নাম তালাক এ হাসান। এই পদ্ধতিতে পরপর তিন মাস তিনবার তালাক দিতে হয় স্ত্রীকে। এক্ষেত্রে স্বামী নিজের মুখে তালাক না বলে অন্য কারো মারফত স্ত্রীকে তালাকনামা পাঠাতে পারে। এই তালাকের পদ্ধতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। এক মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। বেনাজির হিনা নামে ওই সাংবাদিকের অভিযোগ ছিল, তার স্বামী আইনজীবী মারফত তাকে তালাক নামা পাঠিয়েছেন, তাতে স্বামীর সই পর্যন্ত নেই, যে কারণে তিনি নতুন করে বিয়েও করতে পারছেন না। এখনো যদি তিনি এই তালাকের কথা অস্বীকার করেন তাহলে বহুবিবাহ মামলায় তিনি দোষী হয়ে যাবেন।
মহিলার অভিযোগ শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইঞা, বিচারপতি এমকে সিং- এর ডিভিশন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, আজকের আধুনিক সমাজে এটা কী করে চলতে পারে? এটাই কি মহিলাদের সম্মান? স্বামীর এত ইগো যে নিজের মুখে তালাকটাও দিতে পারছেন না?
তবে তিন তালাকের মতো এই প্রথা পুরোপুরি বাতিলের পথে না গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই পদ্ধতিকে খানিক উন্নত করা যায় কিনা সেটা নিয়ে মতামত জানতে চেয়েছে।

