সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৬ সেপ্টেম্বর: ফের দুর্ঘটনার কবলে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের ঘুটগোড়িয়ায় বিডি গোয়েল মেটাল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড নামক কারখানা। মাত্র দুমাস আগে এই কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তরল লোহায় ঝলসে প্রাণ হারায় সাত শ্রমিক। আহত হয় আরোও দশ জন। আজ ফের দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হলেন এক শ্রমিক।
বড়জোড়া থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে কারখানায় বিদ্যুতের লাইনে কাজ করার সময় বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ঝলসে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন ওই শ্রমিক। তাঁর নাম রাকেশ কুমার যাদব। তিনি পড়শি রাজ্য বিহারের বাসিন্দা। ২ মাস আগে ওই কারখানায় সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের দুর্ঘটনা ঘটায় কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ।
খবর পেয়ে বিজেপির কয়েকজন নেতা কারখানার গেটের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ কর ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, শ্রমিকদের সেফটি জুতো কেন নেই ? এই প্রশ্ন তুলে বলেন সেফটি জুতো থাকলে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হতেন না ওই শ্রমিক। ২ মাস আগের দুঃস্বপ্নের রাত্রির কথা মনে করলে গোটা শিল্পাঞ্চলের মানুষ শিউরে ওঠেন। সেদিন গলিত তরল লোহায় ঝলসে গিয়েছিলেন ১৭ জন শ্রমিক। ৭ জন মারা গিয়েছেন। এরপরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। একই অভিযোগ সিপিআইএম নেতা সুজয় চৌধুরীর। সুজয়বাবু বলেন, শিল্পাঞ্চলের কারখানা মালিকরা শাসকদলের নেতাদের কাটমানি দিতে গিয়ে শ্রমিকদের সুরক্ষা, ন্যূনতম মজুরি, অন্যান্য ভাতা দিচ্ছে না। সোমনাথ কর এবং সুজয় চৌধুরীর দাবি, শ্রমিক সুরক্ষার বিষয়ে গাফিলতিতেই বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়েছেন ওই শ্রমিক। কারখানায় অ্যাম্বুলেন্স না থাকারও অভিযোগ এনেছেন তারা।
এদিন জখম শ্রমিককে তড়িঘড়ি বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈদ্যুতিন কাজ করতে গিয়ে তিনি বিদ্যুতস্পৃষ্ট হন। একই কারখানায় পরপর দুর্ঘটনার জন্য কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জি ও। তিনি বলেন, আমি নিজে কারখানার ভিতরে গিয়ে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখতে চাই। শ্রমিকদের সাথেও কথা বলব। যদি কোনো গাফিলতি নজরে আসে তবে জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানাব। তিনিও বলেন ২ মাস আগের ঘটনার পর ফের দুর্ঘটনা নিরাপত্তা বিষয়ে উদাসীনতাকেই ইঙ্গিত করে।

