পটাশপুরের শিশু অঙ্কিতের ভাঙ্গা হাত জুড়লো মেদিনীপুরে এসে

আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ৮ এপ্রিল: লকডাউন পরিস্থিতিতে মেদিনীপুরের শিক্ষক, সমাজকর্মীদের সহযোগিতায় চিকিৎসার ব্যবস্থা হল পটাশপুরের শিশু অঙ্কিতের। সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে খেলতে গিয়ে হাত ভেঙ্গে যায় পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার বড়হাট গ্রামের বাসিন্দা এলআইসি এজেন্ট কালিপদ মাইতি ছেলে বছর পাঁচেকের অঙ্কিতের। সোমবার রাত ও বুধবার সকালে কাছাকাছি বিভিন্ন জায়গায় ছেলের চিকিৎসার জন্য হন্যে হয়ে ছুটে বেড়ালেও প্রাথমিক চিকিৎসা বাদে কোনও সুরাহা করতে পারেননি কালিপদ বাবুর পরিবার। হতোদ্যম হয়ে শেষমেষ মেদিনীপুরে তাঁদের আত্মীয় মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা পার্বতী দে’র সাথে যোগাযোগ করেন। পার্বতী দেবী তাঁর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রসূন কুমার পড়িয়া মারফত যোগাযোগ করেন শিক্ষক ও সমাজকর্মী সুদীপ কুমার খাঁড়ার সাথে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এই ঘটনার খবর পেয়ে সুদীপবাবু তৎক্ষণাৎ ফোনে যোগাযোগ শুরু করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ কুলদীপ মুখার্জির সহকারী সুদীপ বাগের সাথে এবং সরাসরি ডাঃ মুখার্জি সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা করেন। ডাক্তার বাবুর পক্ষ থেকে সুদীপ খাঁড়াকে আশ্বস্ত করে জানানো হয় বিকেলের মধ্যে রোগীকে মেদিনীপুরে নিয়ে আসতে পারলে চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। ডাঃ মুখার্জির তরফে চিকিৎসার নিশ্চয়তার আশ্বাস পেয়ে দুপুরেই তড়িঘড়ি করে গাড়ি ভাড়া করে করে ছোট্ট অঙ্কিতকে নিয়ে মাইতি পরিবার মেদিনীপুরে আসেন।

মাইতি পরিবার মেদিনীপুরে পৌঁছাবার পর থেকেই তাঁদের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়ে মাইতি পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়ান শিক্ষক ও সমাজকর্মী মণিকাঞ্চন রায় ও মাইতি’র আত্মীয় শৈবাল সুন্দর দাস। মেদিনীপুর শহরের একটি নার্সিংহোমে ডাঃ মুখার্জি ছোট্ট অঙ্কিতকে দেখেন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দ্রুত প্লাস্টারের ব্যবস্থা করেন। প্লাস্টার হওয়ার পরে হাসিমুখে নার্সিংহোম ছাড়ে ছোট্ট অঙ্কিত।হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন মাইতি পরিবার ও এই গোটা প্রক্রিয়ায় সঙ্গে যুক্ত সকলে। রাতেই অঙ্কিতকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন মাইতি পরিবার। বাড়ি ফেরার আগে মাইতি পরিবার ধন্যবাদ জানিয়ে যান চিকিৎসক ডাঃ মুখার্জি সহ এই গোটা প্রক্রিয়ায় সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সবাইকে।

শিক্ষক সুদীপ কুমার খাঁড়া ফোনে জানান, অঙ্কিতের চিকিৎসার সব ধন্যবাদ ডাক্তার বাবু ও তাঁর সহযোগীদের প্রাপ্য, যাঁরা এই দুঃসময়ের রোগীর চিকিৎসা করে রোগীর পরিবারকে চিন্তা মুক্ত করেছেন,আমরা শুধু যোগাযোগ করিয়ে দিতে সাহায্য করেছি মাত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *