জয় লাহা, দুর্গাপুর, ১৯ মার্চ: ত্রিকোন প্রেম। প্রেমিকাকে ফিরে পেতে তাঁর স্বামীকে খুন। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে অন্ডালে রেলকর্মী খুনের ঘটনায় তদন্তকারী পুলিশের হাতে। ঘটনায় মৃত রেলকর্মীর স্ত্রী’র প্রেমিকসহ দু’জনকে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার থেকে গ্রেফতার করল সিআইডি ও অন্ডাল থানার পুলিশ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ধৃতদের নাম মঞ্জু দেবী বিহারের সাহাপুর থানারা ফারদার বাসিন্দ। অঙ্কিত কুমার যাদব উত্তরপ্রদেশের বালিয়া থানার শংকরপুরের বাসিন্দা। শনিবার ধৃতদের দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন খারিজ করে দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি অন্ডালে রেল আবাসনে সত্যেন্দ্র কুমার ভাস্কর (৩৫) নামে এক রেলকর্মী খুন হয়। খবর পেয়ে অন্ডাল থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। সত্যেন্দ্রবাবু বিহারের আরা’ র বাসিন্দা। কর্মসুত্রে রেলকলোনীর আবাসনে থাকতেন। তিনি রেলওয়ের সিনিয়র সহকারী লোকো পাইলট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঘটনায় তদন্ত শুরু করে অন্ডাল থানার পুলিশ ও সিআইডি। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও সিআইডি কর্তারা যৌথভাবে নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এবং আশপাশের বাসিন্দা ও তার সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সমস্ত তথ্য পেয়ে অন্ডাল থানার পুলিশের পাঁচ সদস্যের এক দল পাড়ি দেয় বিহারের সাহাপুর ও উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায়। গত ১৭ মার্চ এক মহিলা সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঞ্জুদেবীকে বিহারের সাহাপুর থানার ফারাদা থেকে ও অঙ্কিত কুমার যাদব নামে আরও এক আসামি কে উত্তর প্রদেশের বালিয়ার শংকরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে অন্ডাল থানার পুলিশ।
ঘটনায় ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত অঙ্কিত কুমার যাদব মৃত সত্যেন্দ্রের স্ত্রী’র প্রেমিক। বিয়ের আগে থেকেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বছর তিনেক আগে অঙ্কিত কর্মসুত্রে সিঙ্গাপুর যাওয়া সাময়িক বিচ্ছেদ হয়। গত অক্টোবর মাসে অঙ্কিত ফিরে আসায় আবারও তাদের পুরোনো সম্পর্কে জোড়া লাগে। এবং ওই সম্পর্ক গভীরে পৌঁছায়। তাদের সম্পর্কে পথের কাটা হয়ে দাঁড়ায় সত্যেন্দ্র কুমার ভাস্কর। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক অনুমান ত্রিকোন প্রেমের জেরে খুন। অঙ্কিত তার আত্মিয় মঞ্জুদেবীকে ঘটনার দিন ভুল বুঝিয়ে নিয়ে আসে। ধৃতদের আদালতে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এদিকে ধৃতদের শনিবার দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৯ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন।