জৈন তত্ব বিদ্যায় দেশের মধ্যে প্রথম বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটির অন্বেজা মাজি

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১ জানুয়ারি: জৈন তত্ত্ব বিদ্যায় সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্হান অধিকার করলো গঙ্গাজলঘাঁটির অম্বেজা মাজি। কয়েক হাজার ছাত্র ছাত্রীকে পিছনে ফেলে দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে বাঁকুড়া তথা বাংলার গৌরবের মুকুটে আরো একটি রত্ন পালক যোগ করলো সে। এই পরীক্ষায় গতবছর সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থান পেয়েছিলেন তাঁর পিতা সুখময় মাজি। পিতা পুত্রীর এই যুগল বন্দিতে এরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাভাষী জৈন সম্প্রদায়ের সরাক জাতির সঙ্গে বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দারা ভীষণ খুশি।

অম্বেজা বর্তমানে বর্ধমান গভর্নমেন্ট নার্সিং কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। জৈন তত্ত্ব বিষয়ে চেন্নাইয়ের আদিনাথ জৈন ট্রাস্ট দেশে কয়েকশো শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে জৈনোলজি এবং জৈন তত্ত্ব বিদ্যায় ডিপ্লোমা পাঠক্রম পরিচালনা করে৷ এর মধ্যে বাঙালি জৈন অধ্যুষিত এলাকায় দুটি শিক্ষাকেন্দ্র আছে বর্ধমানের রূপনারায়ণপুর ও বাঁকুড়া জেলার গঙ্গাজলঘাঁটিতে৷ পাঠ্যক্রম শেষে গৃহীত হয় পরীক্ষা। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে জৈন তত্ত্ববিদ্যায় সারা দেশের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম তিন স্থানাধিকারীকে এবং জৈনোলজিতে প্রথম ১০ জন কে বাৎসরিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রজতপদক ও শংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করা হয়৷ এ’বছর জৈনতত্ত্ব বিদ্যায় সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থানাধিকারী গঙ্গাজলঘাঁটির অন্বেজা মাজি। রবিবার নতুন বছরের প্রথম দিনে চেন্নাইয়ের চুলাইয়ে অবস্থিত আদিনাথ সেবাকেন্দ্রে অন্য স্থানাধিকারীদের সাথে অম্বেজা’কে রৌপ্যপদকে ভূষিত করা হয়।

এই প্রসঙ্গে চেন্নাই থেকে অন্বেজা জানায়, তার বাবা বাঙালি জৈনদের মধ্যে ধর্মশিক্ষার প্রসারে কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন৷ তাতে অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি এই পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

তার বাবা সুখময় মাজি বলেন, “এটা শুধু আমার পরিবারের গৌরবের বিষয় নয়, সমস্ত বাংলাভাষী জৈন সম্প্রদায় ভুক্ত সরাক সমাজের গর্ব৷ সরাক প্রাচীন জৈন মহাসংঘের কার্যকর্তাদের প্রচেষ্টায় গঙ্গাজলঘাঁটিতে শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা সম্ভব হয়েছিল৷ তারপরই পরপর দু’বছর এই শিক্ষাকেন্দ্রের গৌরবময় সাফল্য আমাদের উৎসাহ যোগাবে৷ বাঙালি যে কোনো ক্ষেত্রেই সর্বভারতীয় স্তরে পিছিয়ে নেই, এটা তার অন্যতম প্রমাণ৷ গঙ্গাজলঘাঁটির মত রূপনারায়ণপুর শিক্ষাকেন্দ্রও আগামী দিনে এভাবেই বাঙালিকে গৌরবান্বিত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *