কর্মহীন পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন রামপুরহাটের এক কর্মহীন যুবক

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১১ মে: নিজেই কর্মহীন দেড় মাস ধরে। বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুড়োয় অবস্থা। তবুও অন্যের পাশে দাঁড়ানোর অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এক যুবক। মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার পাশাপাশি ইদের আগে দুঃস্থ বিধবা মহিলাদের তুলে দিয়েছেন কাপড়।

সাহাজাদা হোসেন কিনু। রামপুরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পেশায় রামপুরহাট শহরের পাঁচমাথা মোড়ে ফুটপাতের ধারে জুতো ব্যবসায়ী। সেখান থেকেই যৎসামান্য আয়েই বিধবা মা স্ত্রী, দুই কন্যা এবং ভাইকে নিয়ে চলত সংসার। লকডাউনের দিন থেকে সরকারি নির্দেশিকা পালন করতে বন্ধ রেখেছেন ছোট্ট দোকান। ভাই দিনমজুরের কাজ করত। তাও বন্ধ। ফলে সকলেই কর্মহীন। কিন্তু বাড়ির কথা চিন্তা না করে প্রথম দিন থেকে মানুষের সেবায় নিজেকে সঁপে দিয়েছেন তিনি। কখনও বাড়ি বাড়ি চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, মুদিখানা পৌঁছে দিয়েছেন, আবার কখন একবেলা অভুক্ত মানুষদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন। সোমবার সকাল থেকে নিজের ওয়ার্ডের সবজিবাজারে বসে দুঃস্থ, বিধবা মহিলাদের মধ্যে কাপড় বিতরণ করলেন তিনি।

কিনু বলেন, “ফুটপাতে বসে সামান্য যে আয় করেছিলাম তাতে বাড়িতে চাল-আলু সেদ্ধ করে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এমন মানুষ আছেন যাদের বাড়িতে উনুন জ্বালানোর মতো সংস্থান নেই। এই সমস্ত মানুষের বুকের ব্যথা আমাদের মতো মানুষই বুঝতে পারে। গরিবের ব্যথা গরিব মানুষই বুঝতে পারে। তাই আমি বাড়ির চিন্তা বাদ দিয়ে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে সেই চেষ্টা চালাচ্ছি সামর্থ্য মতো। তাছাড়া সামনে ইদ। এই সময় বহু বিধবা মানুষ আছেন যারা নতুন কাপড় কিনতে পারবেন না। তাদের হাতে কাপড় তুলে দেওয়া হল”। অবশ্য তার এই সেবার কৃতিত্ব একা ঝুলিতে ভরতে চাননি কিনু। তিনি বলেন, “বহু ব্যবসায়ী কাপড় দিয়ে সাহায্য করেছেন, কেউ বা চাল, ডাল, আলু দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কয়েক জন শিক্ষক অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন। সবার প্রচেষ্টায় এগিয়ে চলেছি আমরা”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *