নামখানায় ভরা সভায় অমিত শাহকে দেখানো হল কালো পতাকা

আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ১৮ ফেব্রুয়ারি:
বৃহস্পতিবার নামখানায় পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করতে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ তিনি নামখানার ইন্দিরা ময়দানে পৌঁছান হেলিকপ্টারে। সেখান থেকে সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠলে তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক স্লোগান দেন জনা তিনেক মহিলা। তাদের মধ্যেই একজন সভামঞ্চের ঠিক সামনেই ব্যারিকেডের উপর উঠে
‘অমিত শাহ গো ব্যাক, নরেন্দ্র মোদী গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে থাকেন। মুহূর্তেই উত্তেজনা ছড়ায় সভাস্থলে। বিক্ষোভকারীদের সভাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে গেলে বিজেপি কর্মীদের সাথে ধস্তাধস্তিও হয়। পরে পুলিশ কর্মীরা এসে ওই তিন মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তিন মহিলা বাম ছাত্র ও শিক্ষক সংগঠনের সাথে যুক্ত। শুধু সভাস্থলে বিক্ষোভ নয়, এদিন কাকদ্বীপ থেকে নামখানা যাওয়ার পথের দুধারে ‘বেকারের চাকরি কই?’ ‘পাঙ্গা না নিয়ে চাকরি দিয়ে যান’ সংক্রান্ত নানা ধরনের পোস্টার চোখে পড়েছে। এইসব পোস্টার বাম ছাত্র সংগঠনের তরফ থেকে লাগানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। যদিও সভাস্থলে বিক্ষোভের সময় এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা বলে দাবি করেন শাহ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ছাড়াও এদিন সভায় উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, শুভেন্দু অধিকারী, শোভন চট্টোপাধ্যায়, বৈশাখী বন্দোপাধ্যায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল বানসাল, অরবিন্দ মেননের মত বিজেপি নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রের আরও দুই মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত ও নিত্যানন্দ রাই।

এদিন সভায় বক্তব্যের শুরু থেকেই তৃণমূলকে আক্রমণ করতে থাকেন শাহ। আমফানের টাকা নিয়ে দুর্নীতি, সিন্ডিকেট রাজ নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি। পাশাপাশি কেন্দ্রের দেওয়া সাহায্য রাজ্যের মানুষ পাচ্ছেন না, কৃষকরা সঠিক কেন্দ্রীয় সাহায্য পাচ্ছেন না বলেও দাবি করেন তিনি। সারা বাংলায় আইন শৃঙ্খলা নেই বলেও দাবি করেন শাহ। রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসলে সমস্ত দুর্নীতির তদন্ত হবে ও দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেন সরাষ্ট্রমন্ত্রী। শাহ বলেন, “কেন্দ্র থেকে মোদীজি বাংলার মানুষের জন্য টাকা পাঠিয়েছেন, আর সেই টাকা ভাইপো ও তার গুন্ডা বাহিনী লুটেপুটে খেয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে দোষীরা যেখানেই থাকুক না কেন তাদের প্রয়োজনে পাতাল থেকে টেনে বের করে জেলে ভরা হবে।” এছাড়াও গত দশ বছরে তৃণমূল সরকার বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু তা পূরণ হয়নি। সুন্দরবন আলাদা জেলা হয়নি, ঝড়খালিতে ট্যুরিস্ট হাব তৈরি হয়নি বলেও তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেন শাহ। আর সেই কারণে তিনি বলেন, “আপনারা বামফ্রন্টকে সুযোগ দিয়েছেন, তৃণমূলকে দশ বছর সুযোগ দিয়েছেন, আমাদের একবারের জন্য সুযোগ দিন। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার চলবে। এ বাংলা সোনার বাংলা হবেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *