আমাদের ভারত, ১৯ মে:
কেন্দ্র সরকারি নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে প্রথম থেকে সরব রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জাতীয় শিক্ষানীতিকে তুঘলকি বলে আখ্যা দিলেও চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই নয়া জাতীয় শিক্ষা নীতি কার্যকর করে দিল রাজ্যের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়। হ্যাঁ তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য সেটাই বলছে।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী নয়া শিক্ষানীতি পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করেছেন। কিন্তু তার মধ্যেই কলকাতার অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে তারা জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে পাঠ্যক্রম চালু করছে। এবছর থেকেই চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম সেন্ট জেভিয়ার্সে চালু হয়ে যাবে। তিন বছর পড়ার পরে দুবছরের এমএ ডিগ্রির জন্যও পঠন-পাঠন করা যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার চার বছরের স্নাতক হয়ে এক বছরের এমএ কোর্সও থাকবে। কেউ চাইলে চার বছরের সাম্মানিক বা অনার্স স্নাতক হয়ে সরাসরি পিএইচডি করতে পারবেন।ইতিমধ্যেই এই পাঠক্রম সংক্রান্ত বিশদ নির্দেশ নিজেদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছে সেন্ট জেভিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়।
পঁচিশে বৈশাখ কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, রবি ঠাকুরের আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরি করেছেন। এবার সেই শিক্ষানীতি মেনেই পাঠক্রম চালু করছে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়।
জাতীয় শিক্ষা নীতি লাগু করা নিয়ে দোলাচালের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছিল, রাজ্য কি ধীরে ধীরে জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নেবে? গত মার্চে এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি শিক্ষামন্ত্রী। তিন বছরের
পরিবর্তে জাতীয় শিক্ষা নীতি মেনে রাজ্যে স্নাতক পাঠক্রম কি চার বছরেরই হবে?আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই কি চালু হবে নতুন নিয়ম? শিক্ষামন্ত্রী তাতে বলেছিলেন, চার বছরের স্নাতকের বিষয়ে উপাচার্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করব। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কিভাবে কার্যকর করা যেতে পারে তা নিয়ে সে কমিটি মত দেবে। তারপর এই বিষয় নিয়ে বলতে পারি।
এরপরে কমিটি তৈরিও হয়েছিল মার্চের শেষ সপ্তাহে। ছয় সদস্যের কমিটির প্রধান করা হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুরঞ্জন দাসকে। এছাড়া কমিটিতে রয়েছেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওম প্রকাশ মিশ্র, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্মাল্য নারায়ণ চক্রবর্তী, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান কৌশিকি দাশগুপ্ত এবং কাউন্সিলের যুগ্ম সম্পাদক মৌমিতা ভট্টাচার্য। ঠিক হয়েছিল চার সপ্তাহ পর ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের মতামত জানিয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে রিপোর্ট পেশ করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে জাতীয় শিক্ষা নীতি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য।
রিপোর্ট পেশের সময় ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গেছে। কিন্তু সেই রিপোর্ট উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পেশ করা হয়েছে কিনা তা সরকারি ভাবে জানা যায়নি। কিন্তু দেখা গেল, রাজ্যের কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই জাতীয় শিক্ষানীতি কার্য করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়।