সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৫ অক্টোবর: জেলায় দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা কমেছে। এমনই দাবি করেছেন জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি। অপরদিকে জেলাজুড়ে দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। মূলতঃ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোই দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
পুলিশ সুপার জানান, গত ২০২২ সালে জেলার বিভিন্ন সড়কে ২৮টি দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা ছিল। জেলাবাসীর সহযোগিতায় ও পুলিশ কর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তা কমে ১১টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। এই এলাকাগুলির ওপর জেলা পুলিশ কাজ করছে। পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে। জনগণের সহযোগিতায় সেগুলোও কমিয়ে ফেলা হবে।
উল্লেখ্য, পুলিশ সুপার বড়জোড়ায় হাইওয়ে ট্রাফিকের নবনির্মিত কার্যালয় ও বেলিয়াতোড়ে সাব-ট্রাফিক গার্ড কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।ট্রাফিক কন্ট্রোল করার জন্য জেলায় আরও সিসিটিভি ক্যামেরা বাড়ানো হবে বলেও জানান জেলা পুলিশ সুপার।
অন্যদিকে গতকাল কোতুলপুর থানা এলাকায় দুটি পথ দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও মৃত্যুর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। কোতুলপুরে রামচক মোড়ের কাছে একটি চারচাকা গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে থাকা একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছ ভেঙ্গে নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেপরোয়া গতিতে চলছিল গাড়িটি। তবে গাড়িতে কেউ ছিল না। প্রাথমিক ধারণা, চালক ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে গেছে।
দ্বিতীয় ঘটনা, শিয়াস মোড় এলাকায় বিষ্ণুপুর- আরামবাগ রাস্তার ওপর ঘটে। মামার বাড়ি থেকে ভাইফোঁটা নিয়ে ফেরার পথে এক যুবকের মোটর সাইকেলের সঙ্গে একটি চারচাকা গাড়ির ধাক্কা হয়। এতে মোটর সাইকেল আরোহী যুবক রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। চারচাকা গাড়িটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জেলায় গত রবিবার থেকে এই শনিবার পর্যন্ত এক সপ্তাহে জেলায় বেশ কয়েকটি পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার বাঁকুড়া–ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে সিমলাপালের হেত্যাগড়া গ্রামের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধানজমিতে নেমে যায় টাটা থেকে বিষ্ণুপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস।
পুলিশ জানিয়েছে, চলন্ত অবস্থায় বাসটির সামনের চাকা হঠাৎ ফেটে যায়, ফলে নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। আহত সাত যাত্রীকে সিমলাপাল ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় এই ঘটনা ঘটেছে। গত বৃস্পতিবার বিষ্ণুপুর থেকে বাজার সেরে মোটর সাইকেলে করে এক দম্পতি মায়তা গ্রামে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় সাবড়াকোন চাঁদাবিলায় পিকাপ ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা হয়। এতে স্ত্রীর মৃত্যু হয় ও স্বামী গুরুতর জখম হন।
গত রবিবার জয়পুর কুচিয়াকোলে দ্রুত গতিতে বাইক চালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জঙ্গলের শাল গাছে ধাক্কা মারে, এতে মৃত্যু হয় দু’জনের। ওন্দা ও জয়পুরের বাসিন্দা তারা।
গত রবিবারেই বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়ায় পথ দুর্ঘটনায় আকাশ বাউরি নামে ১৭ বছরের এক কিশোর মারা যায়। হাট-আশুড়িয়ার হাটতলা থেকে মোটর সাইকেলে পখন্নার দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তারা একটি গাছে সজোরে ধাক্কা মারে। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে প্রথমে বড়জোড়া ও পরে বাঁকুড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে আকাশ বাউরির মৃত্যু হয়। গত বুধবার দুর্গাপুরের দিক থেকে আসা একটি ডাম্পারের সঙ্গে এক সাইকেল আরোহীর ধাক্কা হয়। ডাম্পারের তলায় পড়ে গিয়েও সাইকেল আরোহী অদ্ভূত ভাবে বেঁচে যান।

