জয় লাহা, দুর্গাপুর, ২১ আগস্ট: সিমেন্ট ফ্যাক্টরির আড়ালে অবৈধ কয়লা কারবার। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ল সিমেন্ট ফ্যাক্টরির মালিক। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ধৃতের নাম যোগেশ রাজদেব। শনিবার লাউদোহার সরপি মোড় এলাকায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১০ মেট্রিক টন অবৈধ কয়লা। রবিবার তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন খারিজ করে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত বছরখানেক ধরে অবৈধ কয়লা পাচার কান্ড নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। কয়লা পাচার কান্ডে তদন্ত নেমেছে সিবিআইয়ের পাশাপাশি রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে পাচার কাণ্ডের জড়িত বেশ কয়েকজন। এমনকি খনি সংস্থা ইসিএলের বেশ কয়েকজন আধিকারিকও গ্রেফতার হয়েছে। কয়লা পাচার কাণ্ডে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ তদন্তকারী সংস্থার। একইসঙ্গে তদন্তকারীদের র্যাডারে রয়েছে বেশ কয়েকটি ছোট শিল্প সংস্থা।
তার মধ্যে কেউ অবৈধ কয়লা পাচারকারীদের কাছে সরাসরি কয়লা ক্রয় করত। আবার কেউ সেই কয়লা মজুত করে পাচার করত বলে অভিযোগ। আর ওই অভিযোগে শনিবার রাতে লাউদোহা ব্লকের সরপি মোড় সংলগ্ন একটি বেসরকারি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে হানা দেয় লাউদোহা থানার পুলিশ। সেখানে অবৈধ কয়লা মজুতের নমুনা পায় পুলিশ। তার পরই ফ্যাক্টরির মালিক যোগেশ রাজদেবকে গ্রেফতার করে লাউদোহা থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করে ১০ মেট্রিক টন কয়লা। অভিযোগ, সিমেন্ট ফ্যাক্টরির আড়ালে খনি এলাকার অবৈধ কয়লা মজুত করে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করত। পাচার কান্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগেই ফ্যাক্টরির মালিক যোগেশ রাজদেবকে গ্রেপ্তার করে পুলিচ।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে কাঁকসার বাঁশকোপায় অবৈধ কয়লা বোঝাই তিনটি লরি ধরা পড়ে। ঘটনায় দু’জন চালক গ্রেফতার হয়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আসানসোলের সালানপুরে একটি বেসরকারি ফ্যাক্টরির হদিশ পায়। যেখান থেকে ওইসব কয়লা পাচার হচ্ছিল। সেখানে কয়লা ছাড়াও জেসিবি মেশিন বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তারপর এদিনের ঘটনায় আবারও নতুন করে কয়লা পাচারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিজেপি নেতা জিতেন চ্যাটার্জি বলেন, “পুলিশ ও শাসকদল তৃণমূলের মদতে এসব কয়লা পাচারকারীদের বাড়বাড়ন্ত। এখন সিবিআইয়ের তদন্তে রাঘব বোয়ালরা ধরা পড়ছে। তাই পিঠ বাঁচাতে পুলিশ সক্রিয় হয়ে ধরপাকড় শুরু করেছে।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের লাউদোহা ব্লক সভাপতি সুজিত মুখার্জি বলেন, “বিজেপির পায়ের তলায় মাটি সরে গেছে। তাই হালে পানি পেতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপপ্রচার করছে।”
এদিকে রবিবার ধৃত যোগেশ রাজদেবকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে ৫ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন। অবৈধ কয়লা কিভাবে কোথা থেকে আসত? কারা সরবরাহ করত? এবং কেথায় পাচার হত? তা জানতে ধৃতকে হেপাজতে নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

