আমাদের ভারত, ১১ জুলাই: মহরমের সময় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গার মত বাউরিয়ায় হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে সংখ্যালঘু দুষ্কৃতীরা। বহু হিন্দু যুবকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয় এবং হিন্দুদের দোকান, সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। আজ সেখানে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে বাধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
হাওড়ার মনসাতলায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা তিনি পরিদর্শন করতে চান এই মর্মে তাঁর বিধানসভা অফিস থেকে ব্যক্তিগত সচিব ৯ তারিখ থেকে জেলার এসপি এবং ডিজিপিকে মেইল করেন। তাতে বিরোধী দলনেতাকে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত এবং পবিত্র মন্দির পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু গতকাল গভীর রাতে এসপি হাওড়া গ্রামীণ আমার ব্যক্তিগত সচিবের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন যে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে, তাই কয়েকদিন পরে যেন তিনি আসেন। এরপর বিরোধী দলনেতার অফিস এসপিকে জানায় যে, প্রশাসন দিনক্ষণ ঠিক করে দিক, সেই সময়েই বিরোধী দলনেতা এলাকায় যাবেন। কিন্তু এখনও তার উত্তর আসেনি। এর আগে মোথাবাড়ি, শামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান, মহেশতলা রাবীন্দ্রনগরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
তাঁর কথায়,”আমি বিরোধী দলনেতা, প্রোটোকল মানতে হয়। এসপি গতকাল সন্ধ্যায় উত্তর দিয়েছেন। আমি আবার রিটার্ন মেইল পাঠিয়েছি। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ উত্তর না দেয়, তাহলে আগের মতো রবীন্দ্রনগর, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জ, মোথাবাড়ির মতো বাউড়িয়া এলাকায় যাব। যেখানেই মন্দির অপবিত্র হয়েছে, বিজেপি তা ধর্মীয় নিয়ম মেনে পূজার মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। বিরোধী দলনেতা হিসেবে এটাই আমার অঙ্গীকার।”
তিনি জানান, উলুবেড়িয়ার ৭ হিন্দু পরিবারের সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন, যাদের মধ্যে দলের স্থানীয় মন্ডল সভাপতি রবীন সাধুখাঁও রয়েছেন। এরা গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলেছেন, এবং যারা এই মিথ্যা মামলার আইনি লড়াই লড়ছেন, সেই আইনজীবীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন।
তাঁর দাবি, হিন্দুদের আক্রমণ করা হয়েছে, মন্দির ভাঙ্গা হয়েছে, হিন্দুর রক্ত ঝরানো হয়েছে, হিন্দু শিশুদের কপালে আঘাত করা হয়েছে, হিন্দুদের দোকান লুট হয়েছে, কিন্তু একটি মুসলিম দোকানও ছোঁয়া হয়নি। সবজি পর্যন্ত লুট করেছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পূর্ণ আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ধৃতদের উপর শারীরিক অত্যাচার করা হচ্ছে জেলে বলেও অভিযোগ করেন শুভেন্দুবাবু। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশি হেফাজতে এমনটা চলতে পারে না।
কটাক্ষ করে তিনি বলেন, অনুব্রত মণ্ডলকে ধরতে পারেন না, ধর্ষককে ধরতে পারেন না, আর বিজেপি হিন্দু কর্মীদের ধরে নির্যাতন করবে? এটা হতে পারে না।
তিনি জানান, “আমি ওসিকে বলেছি এই কেসের আইও একজন এসআই শাহজাহান। বলেছি, মুঘলরা শক্তিশালী ছিল বলে শাহজাহান ছিল। এখন শাহজাহানের শাসন নেই। এই শাহজাহানকে সংবিধান মেনে কাজ করতে বলুন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে হবে। শুধু মন্দির ভাঙ্গা, দোকান ভাঙ্গা, রক্তপাত নয়, এক হিন্দু শিশুকে আঘাত করা হয়েছে সেই অস্ত্র দিয়েই, যেরকম অস্ত্র দিয়ে হরগোবিন্দ দাস ও চণ্ডীদাসের উপর কোপানো হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, সরকারি টাকায় বেতন নেওয়া এই শাহজাহান এবং তার সহযোগীরা যদি হিন্দু ও বিজেপি কর্মীদের মারধর করে, আমরা চুপ করে থাকব না।
তাঁর কথায়, “এই রাজ্যে মুসলিম লীগ ২ সরকারের নেতৃত্বে হিন্দুদের ধ্বংসের চেষ্টা চলছে।”
তিনি জানান, রবিবার থানার সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে। শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে কর্মসূচি করা হবে।