জ্ঞানব্যাপীর পর কৃষ্ণ জন্মভূমি! মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদেও সমীক্ষার আবেদন মঞ্জুর এলাহাবাদ হাইকোর্টের

আমাদের ভারত, ১৪ ডিসেম্বর: জ্ঞানব্যাপী পর মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদেও সমীক্ষার আবেদন মঞ্জুর করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। কৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির সংলগ্ন শাহি ইদগাহের জায়গাই শ্রীকৃষ্ণের আসল জন্মস্থান বলে দাবি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির। তাই সেখানে সমীক্ষার আর্জি জানিয়েছিল তারা। সেই আর্জিতে সাড়া দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

হিন্দু পক্ষের আইনজীবী হরিশংকর জৈন, বিষ্ণু শঙ্কর জৈন, প্রভাস পান্ডে এবং দেবকি নন্দন মথুরা শাহি ইদগাহকে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি বলে চিহ্নিত করে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি তুলেছিলেন। এই দাবির বিরোধিতা করেছিল মুসলিম পক্ষ। হিন্দু পক্ষের দাবি, বিশ্বনাথ মন্দিরের মতো মথুরার ওই মন্দিরটিও ধ্বংস করে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা সেই দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়।

মথুরা নিম্ন আদালতে প্রথমে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলার বিরোধিতা করে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে মুসলিম পক্ষ হাইকোর্টে যায়। মামলাটিতে এবার হিন্দুপক্ষ মসজিদ চত্বরে পরীক্ষা নিরীক্ষার আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদন মঞ্জুর করল হাইকোর্ট। বিচারপতি মায়াঙ্ক কুমার জৈনের সিঙ্গেল বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন।

১৬ নভেম্বর এই মামলার শুনানি শেষে রায় সংরক্ষিত রেখেছিলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার সেই রায় ঘোষিত হল। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, একজন কোর্ট কমিশনারের পর্যবেক্ষণে সমীক্ষার কাজ করতে হবে শাহি ইদগাহের বিতর্কিত ১৩.৩৭ একর জমিতে। আগামী সোমবার সার্ভের প্যানেল গঠন করবে উচ্চ আদালত।

১৯৩৫ সালের মন্দির চত্বরের মালিকানা মথুরা রাজার হাতে সঁপে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট। পর্যায়ক্রমে সেই সত্ত্ব বর্তায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ট্রাস্টের হাতে। স্বাভাবিকভাবে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে তৈরি হয় সংঘাত। অবশেষে ১৯৬৮ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে জমির মালিকানা হিন্দুদের হাতে থাকলেও মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকার পায় মুসলিমপক্ষ।

মথুরার প্রাচীন কাটারা স্তুপ এলাকা, কাটরা কেশব দাস নামেও পরিচিত। সেখানে শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান রয়েছে। তার পাশেই ঠিক রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির দাবি, মসজিদের জমিতে এককালে কৃষ্ণ মন্দির ছিল। তাদের দাবি, ওটি ভগবান কৃষ্ণের আসল জন্মস্থান। তাদের আরও দাবি, মসজিদ চত্বর খোঁড়া হলে সেখানে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যাবে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির যুক্তি, মসজিদের দেওয়ালে পদ্মফুলের ছবি খোদাই করা রয়েছে। মসজিদের কারুকার্যের সঙ্গে হিন্দু মন্দিরের সাজুয্য রয়েছে বলেও দাবি। মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ হয়েছে বলে দৃঢ় বিশ্বাস তাদের। তাই এই মসজিদ চত্বরকে শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি বলে দাবি করে ১৩.৩৭ একর জমির উপর পূর্ণ অধিকার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *