চিন্ময় ভট্টাচার্য, আমাদের ভারত, ১৪ মে: রবিবার তৃতীয় দফার লকডাউন শেষ হচ্ছে। লকডাউনের মেয়াদ আবার বাড়বে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে রেলের নয়া ঘোষণায় সেই আশঙ্কাই বাড়ল। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সমস্ত ট্রেনের টিকিট বাতিল করার কথা ঘোষণা করল ভারতীয় রেল। বৃহস্পতিবার সকালে রেল মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে এই কথা জানানো হয়েছে। বাতিল হওয়া ট্রেনের মধ্যে রয়েছে প্যাসেঞ্জার ট্রেন, মেল, এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেন। ব্যতিক্রম কেবল শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন এবং স্পেশাল প্যাসেঞ্জার ট্রেন।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, যে সব যাত্রীরা ৩০ জুন পর্যন্ত প্যাসেঞ্জার, মেল, এক্সপ্রেস বা লোকাল ট্রেনে টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অন্যদিকে, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন এবং স্পেশাল প্যাসেঞ্জার ট্রেন পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনেই চলবে। দিল্লি এবং দেশের ১৫টি বড় স্টেশনের মধ্যে এই স্পেশাল ট্রেনগুলি চলাচল করবে বলেও রেল দফতর জানিয়েছে।
গত মাসে রেল দফতর লকডাউনের আগে কাটা ৯৪ লক্ষ টিকিটের মূল্য হিসাবে মোট ১৪৯০ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে। ২২ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে বুক করা টিকিটের মূল্য হিসাবে আরও একদফায় ৮৩০ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে রেল। এবার আবারও একটা মোটা অঙ্কের টিকিটমূল্য ফেরত দিতে চলেছে। এর ফলে ভারতীয় রেলের তো বিরাট আর্থিক ক্ষতি হলই, যাত্রীরাও হেনস্তার শিকার হলেন।
এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সব মহলের চাপে এদিন পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে কার্যত পিছু হঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইটে বুঝিয়ে দিলেন, বিরোধীরা মিথ্যে বলেননি। তাঁর সরকার এতদিন পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে আনতে কোনও স্পেশাল ট্রেনের আবেদন করেনি। এবার চারদিক থেকে সমালোচনার শিকার হয়ে আবেদন করা শুরু করেছে। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছেন, ‘ভিনরাজ্যে আটকে থাকা আমাদের রাজ্যের মানুষদের ঘরে ফেরাতে আমরা দায়বদ্ধ। যাঁরা যাঁরা ফিরতে চান, তাঁদের জন্য আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা করেছি। ইতিমধ্যেই ১০৫টি অতিরিক্ত স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছি আমরা। আগামী দিনে দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলার মানুষদের সেই ট্রেনগুলো ঘরে ফেরাবে।’ এর পাশাপাশি কোন ট্রেন, কবে, কোথা থেকে রওনা দেবে এবং সেগুলি কখন এখানে এসে পৌঁছাবে সেই যাবতীয় তথ্য ‘ডব্লিউবি.গভ.ইন/পিডিএফ/ট্রেন_স্কেডিউল’ নামে একটি ওয়েবসাইটে জানা যাবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই টুইটও কিন্তু, এদিন কার্যত রেল মন্ত্রকের সুরেই লকডাউন আরও বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট সব মহলের।