পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ডিসেম্বর: সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার এবং ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার কারণে এদেশে চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশিদের বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জে এন রায় হাসপাতাল। এরপর আরো একধাপ এগিয়ে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী ঘোষণা করলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার না থামালে এদেশে চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশিদের সামাজিক ভাবে বয়কট করা হবে। তাদের চিকিৎসা পরিসেবা দেওয়া তো দূরের কথা, বাংলাদেশিদের হাত যেহেতু সেই দেশের নিরপরাধ হিন্দুদের রক্তে রঞ্জিত তাই এদেশে চিকিৎসা করতে এলে তাদের হোটেলে খাবার দেওয়া, এমনকি দোকানে জিনিস বিক্রি করাও উচিত নয়। শুধু তাই নয়, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার একটি প্রতিনিধির মন্ডল রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে রবিবার জে এন রায় হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য হাসপাতালের আধিকারিক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের পুষ্পস্তবক, সমর্থন জানিয়ে চিঠি, নিজের গবেষণার ডক্টরেট থিসিস এবং চকলেট উপহার দিয়ে সম্মানিত করলেন।
হিন্দু মহাসভার বক্তব্য, বাংলাদেশিরা বেইমান এবং নরপিশাচ বলেই যে ভারতবর্ষের হাজার হাজার সেনাবাহিনীর প্রাণের বিনিময়ে তারা স্বাধীনতা পেয়েছে, তাদের মা বোনদের ইজ্জত রক্ষা পেয়েছে সেই ভারতবর্ষের জাতীয় পতাকাকে পাপোস হিসেবে ব্যবহার করছে। ওদের মনে রাখা উচিত, ভারত পাশে না দাঁড়ালে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্বই থাকতো না। তাদের মা- বোনদের ইজ্জত রক্ষা পেত না। বাংলাদেশের পতাকার মাঝখানে ঐ লাল উদীয়মান সূর্যের লাল রংটা অত বেশি গাঢ় লাল ভারতীয় সেনা জওয়ানদের চাপ চাপ রক্তের বিনিময়ে। পৃথিবীতে শতাধিক মুসলিম দেশ আছে, কিন্ত এইরকম বেইমান সেই দেশগুলোতে দেখা যায় না। বাংলাদেশে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময়কৃষ্ণ দাস প্রভুর পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি মোহাম্মদ ইউনুস কিভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন সেই বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করছেন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সদস্যরা। কারণ বাংলাদেশের শাসনভার ইউনুস গ্রহণ করার পর থেকেই বাংলাদেশে অত্যাচার এবং অরাজকতা সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে। এমনিতেই ভারতের মানুষদের শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়ানো এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা যারা ভারতে আসতে আগ্রহী তাদের ভারতে স্থান দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে হিন্দু মহাসভা।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিপূর্বেই বাংলাদেশের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছে, যাতে রাজ্য সরকারের অবস্থানের প্রশংসা করেছেন ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্র সরকার নিশ্চই দ্রুত এমন পদক্ষেপ নেবে যাতে বাংলাদেশে সনাতনী হিন্দু এবং মডারেট মুসলমানরা ইসলামিক আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাবেন। হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি মণ্ডলে আজ সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী ছাড়াও অনামিকা মন্ডল, অশোক প্রজাপতি, আদিত্য হালদার, অপর্ণা বসু সহ একাধিক রাজ্য কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।