Air India, Plane crash, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ, পোক্ত প্রমাণ ছাড়া চালকদের ত্রুটি মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বললেন পাইলটরা মেরুদন্ড ও সম্পদ

আমাদের ভারত, ১২ জুলাই: আমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনায় জ্বালানির সুইচ কাটার জন্য ভয়াবহ পরিণতি হয়েছে, দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এই বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে চাইছে না কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী কে রামমোহন নাইডু। এ বিষয় কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে উপযুক্ত প্রমাণ প্রয়োজন বলে তাঁর মনে হয়েছে।

বিমান দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সুইচ বন্ধ হওয়া নিয়ে দুই পাইলটের মধ্যে শেষ মুহূর্তের কথোপকথন প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে জানা যাচ্ছে, জ্বালানি সুইচ বন্ধ হয়ে যায়। তখন এক পাইলট অপরকে প্রশ্ন করেন, কেন তুমি বন্ধ করে দিলে জ্বালানি? অন্যজন উত্তর দেন আমি করিনি। তবে কোন পাইলট কী বলেছিলেন তা প্রাথমিক রিপোর্টে স্পষ্ট নয়।

এ এ আই বি’র রিপোর্ট পাওয়ার পর শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, আমাদের এই বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত নয় বলে মনে করছি। গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ভালো পাইলট কর্মীরা আমাদের কাছে রয়েছেন। তারা অসামরিক বিমান পরিবহনের মেরুদন্ড। তারা অসামরিক বিমান পরিবহনের প্রাথমিক সম্পদ। পাইলটরা যাতে ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন, সেটাও আমরা দেখি। এখনই সিদ্ধান্ত না নিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করুন।

মন্ত্রীর কথায় এটির মধ্যে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিষয় জড়িয়ে রয়েছে। এই রিপোর্টটি সম্পর্কে এখনই মন্তব্য করা ঠিক হবে না। প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা পেয়েছি, কিন্তু পোক্ত কিছু আসার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ১২ জুন গুজরাটের আমেদাবাদে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান টেক অফের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙ্গে পড়ে। দুর্ঘটনায় ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। তিনিও এই বিমানের সাওয়ার ছিলেন।

শনিবারের উঠে আসা এ এ আই বি’র প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী দুই পাইলট শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেয়েছিলেন তারা। তাদের শারীরিক দিক থেকে কোনো ত্রুটি ছিল না।

এদিকে প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ইঞ্জিন এক এবং ইঞ্জিন দুই রানওয়ে ছাড়ার পরই বন্ধ হয়ে যায়। বিমানটি যখন গতি নিয়ে নিয়েছে ঠিক সেই সময়ই দুটি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছাচ্ছিল না। মুহূর্তের মধ্যে বিমানের গতি ও উচ্চতা কমতে থাকে। পাইলটরা সেই সময় দুটি জ্বালানি সুইচ আবার কাট অফ থেকে রানে নিয়ে এসেছিলেন। ইঞ্জিন চালু করার মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। ইঞ্জিন দুটি সামরিকভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরেও ছিল। কিন্তু ইঞ্জিন এক আর চালু করা যায়নি। পাওয়ার যায়নি থ্রাস্টে। যার পরিণতিতেই এই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

এদিকে জ্বালানি কন্ট্রোল সুইচের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় যে, আমেরিকাতেই বোয়িং ৭৩৭ বিমানে ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ নিয়ে ২০১৮ সালের মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন সতর্ক করেছিল। সাত বছর আগে এফ এফ এ জানায় কিছু বোয়িং ৭৩৭ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো লুকিং ফিচার নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ইনস্টল করা হয়েছে, যা বিপদজনক হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে এই ক্ষেত্রেও সুইচ গোলমাল ছিল না তো?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *